প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

মেয়র আরিফের কথা শুনছে না বিআরটিএ!

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ০১:৩১ অপরাহ্ণ
মেয়র আরিফের কথা শুনছে না বিআরটিএ!

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর আয়োজনে নাগরিক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, ফুটপাত নাগরিকদের চলাচলের জন্য, ব্যবসা বসানোর জন্য নয়। মার্কেটের সামনে যেসব ব্যবসায়ীরা টাকার বিনিময়ে চা-পানের দোকান বসান তাদের লাইসেন্স বাতিল করার আহবান জানান বক্তারা। এছাড়া পাইলট প্রকল্প হিসেবে নগরীর জিন্দাবাজার থেকে চৌহাট্রা রাস্তা পর্যন্ত সম্পূর্ণ হকারমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখতে মেয়রের প্রতি আহবান জানান নাগরিকরা। এদিকে মেয়র আরিফ অভিযোগ করে বলেন, অবৈধ সিএনজি অটোরিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ)কে বলা হলেও ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।

মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের একটি হল রুমে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা আরো বলেন, এই সিলেট শহরকে সুন্দর বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরিত করতে হবে। যত্রতত্র সিএনজি অটোরিকশা যাতে যাত্রী উঠানামা না করতে পারে সিটি কর্পোরেশন এর ব্যবস্থা নিতে হবে। বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেয়র কেন একা হকার উচ্ছেদ অভিযানে নামবেন? কাউন্সিলদের কি কোন দায়দায়িত্ব নেই? তারা যদি নিজ নিজ এলাকা সুন্দর করে রাখতেন, তাহলে সিলেট নগরী আজ নোংরা থাকতনা। যে কাউন্সিলর নিজ এলাকা সুন্দর করে রাখবেন, তাঁর জন্য সিটি কর্পোরেশন এওয়ার্ড ঘোষণা করলে অনেকে উৎসাহী হয়ে কাজ করবে বলে মনে করেন বক্তারা।

বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারন করে আরো বলেন, মেয়রের কাজে যদি কোন বাঁধা আসে তাহলে নগরবাসী মেনে নেবেনা। নগরবাসীকে সকল নিয়মনীতি মেনে চললে এই সিলেট হবে সুন্দর নগরী। মেয়র আরিফ সিলেটের উন্নয়নে যে অবদান রাখছেন, তা প্রশংসার দাবী রাখে। মেয়র আরিফ ২৪ ঘন্টা হকারদের পাহারা দিতে পারবেননা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এজন্য আমাদেরকে সহযোগীতা করে হবে।

সভার শুরুতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী হকারমুক্ত ফুটপাত, নগর এক্সপ্রেস, চলমান উন্নয়ন কাজ, সিএনজি অটোরিকশা ও লালবাজার ইস্যু নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপর শুরু হয় উন্মুক্ত আলোচনা।

মেয়র আরিফ তাঁর বক্তব্যে বলেন, নগরীতে যত্রতত্র সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড থাকার কারণে যানঝট লেগে থাকে। তাদেরকে একটি নিয়মের আওতায় আনতে হবে। নগর এক্সপ্রেসের পাশাপাশি সিএনজি অটোরিকশা গাড়ী চলাচল করতে সিটি কর্পোরেশনের কোন বাধা নেই বলে মেয়র মন্তব্য করেন। সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনা গাড়ীকে সঠিক জায়গায় রাখার জন্য বলা হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, শহরে এখন দুই হাজার অবৈধ ইঞ্জিন চালিত রিকশা চলছে। এছাড়া ১১ হাজার অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে। কোন রোডে কতটি গাড়ী চলাচল করবে তা নির্ধারণের জন্য বিআরটিএ কে বলা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা।

হকার প্রসঙ্গে মেয়র আরিফ বলেন, একেকটি হকারের ২০/৩০টি দোকান রয়েছে। তাদের ৪/৫ তলা বাসা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদেরকে হকার বলা যায়না। যারা ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণভাবে সবজি কিংবা ফলমূল বিক্রি করে তাদেরকে হকার বলা যায়। কিন্তু যারা চৌকি বসিয়ে কাপড় বিক্রি করছে তারা হকারের তালিকায় পড়েনা। একটি সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এরা গরীব নয়। এরা অনেক ধনী।

সম্প্রতি লালবাজারে অভিযান প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি বলেন, লালকুটি থেকে দুর্গাকুমার প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তার সামনে সবজি ও ফল বিক্রেতারা দখল করে রেখেছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত জায়গায় পশু জবাই না করে ড্রেনের উপর পশু জবাই করে পরিবেশ নোংরা করছে মাংস ব্যবসায়ীরা।

চলমান উন্নয়ন কাজ নিয়ে মেয়র আরিফ বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। আন্ডার গ্রাউন্ড বিদ্যুতের ৩৩ কেভি লাইনের পরীক্ষার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি জানান।
সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেট এর সভাপতি আব্দুল করিম কিম, জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সভাপতি শেখ মখন মিয়া, সিলেট চেম্বারের সহসভাপতি তাহমিন আহমদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিশফাক আহমদ মিশু, মহিলা চেম্বারের সভানেত্রী স্বর্ণলতা রায়, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক, ইমাম সমিতির নেতা মাওলান সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন।