প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

আইন হওয়া সত্বেও বাস্তবায়ন না করায় কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রাণ সিএইচসিপি রা হতাশ

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২, ২০১৯, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ
আইন হওয়া সত্বেও বাস্তবায়ন না করায় কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রাণ সিএইচসিপি রা হতাশ

বাংলাদেশ সরকারের সফলতম প্রতিষ্ঠান প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার কেন্দ্র কমিউনিটি ক্লিনিক। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌছানোর লক্ষে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রথম ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ২০০০ সালে টুঙ্গিপাড়া গীমাডাঙ্গায় চালু করেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম । ২০০০ সাল পর্যন্ত ১০হাজারের অধিক সিসি নির্মিত করা হয় সারা বাংলাদেশের ওয়ার্ড পর্যায়ে। ২০০০ সাল পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এই জনকল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠান টি ২০০৮ সাল পর্যন্ত বন্ধ ও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুনরায় সরকার গঠন করেই শুরু করেন রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ জনগণের স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে। RCHCIB প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে নতুন ক্লিনিক নির্মাণ ও কর্মী নিয়োগ দিয়ে গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের অক্টোবর মাস হতে। কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের পদবীর নাম কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডা সংক্ষেপ সিএইচসিপি। দেশের একঝাঁক তরুণ তরুণী স্বচ্ছ নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে ৫২% নারী ৪৮% পুরুষ কর্মজীবন শুরু করেন। প্রকল্প চাকরি হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অঘাত আশা ও বিশ্বাস থেকে স্ব স্ব এলাকায় নিয়োগ কৃত কর্মী তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে সেবাদান কাজ চালিয়ে যান। জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা ও নরমাল ডেলিভারিতে সম্মান অর্জন করেছে এই কর্মী বাহিনী। তারই ধারাবাহিকতায় সর্ব প্রথম চাকরি রাজস্বকরণের স্বপ্নের বীজ বপন করেন সিএইচসিপিদের মনের ভিতর তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক ডাঃ মাখদুমা নার্গিস, অতিরিক্ত সচিব ও প্রকল্প পরিচালক আরসিএইচসিআইবি (কমিউনিটি ক্লিনিক)। ২৯/০৭/২০১৩ ইং সালের স্মারক নং-আরসিএইচসিআইবি/কনঃ/শৃঙ্খলা -৯৭/২০১২/১০০৭ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সকল জারিকৃত চিঠিতে বলা হয়। কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবাদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ সিএইচসিপি দের চাকুরী রাজস্ব খাতে স্থানান্তর প্রসঙ্গে। এরই ২ মাস পর ১৯/৯/২০১৩ ইং তারিখে ডাঃ মোঃ শাহ নেওয়াজ, পরিচালক (প্রশাসন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালী ঢাকা। মহাপরিচালকের পক্ষে দেশের সকল সিভিল সার্জনদের কে অবহিত করে একটি চিঠি ইস্যু করেন। স্মারক নং-স্বাঃঅধিঃ/প্রশা-৩/২০০৮/৪৬৬৮। চিঠির বিষয় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার(সিএইচসিপি) দের চাকুরী স্থায়ী করণ প্রসঙ্গে। সেই থেকে সারা দেশে প্রায় ১৪ হাজার কর্মী চাকরি রাজস্বকরণের আশা আরো তীব্রতর হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে নতুন প্রকল্প শুরু হলো। সেই প্রকল্প শেষ হয়ে তৃতীয় প্রকল্প সিবিএইচসি প্রকল্প কার্যক্রম শুরু করল কিন্তু কর্মীদের চাকরি রাজস্বকরণের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো না। কর্মীদের বেতন ভাতা কনসুলেটেড হিসাবে প্রদান করা হয় সরকারি কোন সুবিধা তারা এখনও অবধি পান নাই। একই বেতনে দীর্ঘদিন চাকরি সামাজিক ভাবেও হেয় হতে হয়। বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, চাকরি রাজস্বকরণের দাবী তে শুরু হয় স্মারকলিপি প্রদান, মানব বন্ধন,মহা সমাবেশ কর্মসূচি সহ সর্বশেষ ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দীর্ঘ এক মাস টানা অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট গঠনের ঘোষণা দেন।একই বছর ৮ ই অক্টোবর জাতীয় সংসদে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন পাশ হয় এবং গেজেট প্রকাশিত হয়। উক্ত আইনের ২৪ ধারায় কর্মীদের সরকারি চাকরির ন্যায় সকল সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান রাখার কথা বলা হয়েছে। সেই সাথে আইনটি কার্যকর হওয়ার দিন হতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের সকল কিছু কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইনে পরিচালিত বিধান রাখা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন বাস্তবায়ন হতে দেরী হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন মহোদয় স্বাক্ষরিত চিঠি যার স্মারক নং-৪৫.০০.০০০.১৭৩.০০২.০৪০.১৮২৪ তারিখ ২৮/১/২০১৯ ইং খ্রিস্টাব্দে জারিকৃত চিঠিতে নির্দেশনা জারি করেন। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন ২০১৮ এর ধারা ৪(২)২৪ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে। উক্ত নির্দেশনার পরও আর একটি বছর অতিবাহিত হতে যাচ্ছে তবুও আইনটি বাস্তবায়নে গড়িমসি হচ্ছে কর্মকর্তাদের। এদিকে দিন দিন কর্মী অসন্তোষ চরম আকার ধারণ করছে। ইতিমধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক দায়িত্ব পালন কালে বহু সিএইচসিপি অকাল মৃত্যু বরণ করেছেন কিন্তু সরকার বা প্রকল্পের পক্ষ হতে কর্মীর পরিবারকে কোন আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয় না শুধু মাত্র একটি শোকবার্তা চিঠিতে সীমাবদ্ধ। আন্দোলন চলাকালীন সিএইচসিপি এসোসিয়েশন সংগঠনের ৮ জন নেতা কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কৃত করে রেখেছেন যার প্রত্যাহার করছেন না কর্তৃপক্ষ ফলে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে করুন ভাবে দিনযাপন করতে হচ্ছে। তাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করার জোর দাবী জানায়। দীর্ঘদিন একই বেতনে চাকুরী করায় সেবাদান কাজের প্রতিও অনীহা দেখা যাচ্ছে সকল কর্মীদের। আইন অনুযায়ী সরকারি সকল সুবিধা দ্রুত প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) বৃন্দ।

সংবাদটি শেয়ার করুন।