প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৮ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সবুজ গালিচায় হেলস যেন ‘বেদনার নীল’

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৮:০০ পূর্বাহ্ণ
সবুজ গালিচায় হেলস যেন ‘বেদনার নীল’

স্পোর্টস রিপোর্টার:
বেদনার কোনো রং হয়? হয়তো না। তবে গ্রিক পুরাণ অনুসারে সেটিকে নীল বলা চলে। প্রাচ্যেও কষ্টের তীব্রতা বোঝাতে নীল রঙের ব্যবহার রয়েছে। গতকাল সিলেটে লাক্কাতুরার সবুজ গালিচায় বেদনা ও হতাশায় নীল হয়েছিলেন হাজার হাজার দর্শক। দুপুরে মাঠে গড়িয়েছিল একাদশ বিপিএলের সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচ। সিলেট স্ট্রাইকার্স-রংপুর রাইডার্স ম্যাচটিতে দুইশো রানের বেশি করেও হেরেছে সিলেট। হতাশায় অনেকে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ না দেখেই মাঠ ছেড়েছেন। তাদের হতাশ করার নেপথ্যে ছিলেন চলতি বিপিএলের তৃতীয় সেঞ্চুরিয়ান অ্যালেক্স হেলস।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম সবুজে মোড়ানো। চা বাগান থেকে শুরু করে স্টেডিয়ামের টার্ফ, সবখানেই সবুজের আধিক্য। মাঠে আসা দর্শকরা আগে চা বাগানে ছবি তুলে পরে ঢুকেছেন স্টেডিয়ামে। কিন্তু গতকাল সিলেটের প্রথম দিনের খেলায় তাদের হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে। মিরপুরে সিলেট স্ট্রাইকার্স খেলেছিল একটি ম্যাচ। সেই ম্যাচে রংপুর রাইডার্স জিতেছিল ৩৪ রানে। গতকাল ফিরতি ম্যাচে লাক্কাতুরায় এই দুদল মুখোমুখি হয়েছিল। কিন্তু এবারও রক্ষা হয়নি সিলেটের। শুরুতে ব্যাটিং করে ২০৫ রানের বড় সংগ্রহ গড়েও তারা হেরেছে। রংপুরের জয়ের নায়ক হেলস ও সাইফ হাসান। এই দুই ব্যাটারের কল্যাণে রংপুর জয় পেয়েছে ৮ উইকেটে।

একাদশ বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি করেছেন চিটাগাং কিংসের ব্যাটার উসমান খান। দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন ঢাকা ক্যাপিটালসের অধিনায়ক থিসারা পেরেরা। দুটি সেঞ্চুরিই এসেছে মিরপুর পর্বে। সিলেট পর্বের প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচেই এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন ইংলিশ তারকা হেলস। হেলসের সঙ্গে সাইফ গড়েছেন বিপিএলের চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি, রংপুরের জন্য এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে চারটিতেই জয় পেল রংপুর।

সিলেটে প্রথম দিনের খেলায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্টেডিয়াম চত্তরে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহল ছিল। খেলা দেখতে আসা দর্শকদের দুই স্তরের তল্লাশি-চৌকি পেরিয়ে গ্যালারিতে ঢুকতে হয়েছে। ঢাকার মতো সিলেটের গ্যালারিতেও ছিল ‘জিরো ওয়েস্ট জোন’। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনে শহিদ হওয়া আবু সাঈদের নামে একটি স্ট্যান্ড করা হয়েছিল। বিভিন্ন পয়েন্টে মুগ্ধ পানির কর্নারের অস্থায়ী বুথও ছিল, যেখান থেকে দশর্করা বিনামূল্যে পানি পেয়েছেন। প্রথম দিনের খেলায় উপচে-পড়া দর্শক না থাকলেও গ্যালারি ভর্তি দর্শক ছিল। অল্প কিছু আসন খালি ছিল। এনসিএলে দর্শকখরা থাকলেও বিপিএলের প্রথম দিনের খেলায় সেটি হয়নি সিলেটে।

ঘরের মাঠে ম্যাচ হেরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের কোচ এ কে এম মাহমুদ ইমন জানিয়েছেন, তাদের পরিকল্পনায় ছিল বড় স্কোর গড়া। সেটি করতে পেরেছিলেন। কিন্তু বোলিংয়ে ঘাটতির কারণে ২০৫ রানকে তারা রক্ষা করতে পারেননি। তার মতে, ব্যাটিং ভালো হলেও বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে কিছু ঘাটতি ছিল। সিলেট-রংপুর ম্যাচে দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন জাকের আলি অনিক, ছিলেন তানজিম হাসান সাকিবও। দুজনেই সিলেটের সন্তান। সিলেটের হয়ে জাকের ৫ বলে ২০ রানের ক্যামিও এবং সাকিব বল হাতে ২৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু তারা কেউই হাসিমুখ নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। টানা দুই হারে তাদের দল টেবিলের নিচে চলে গেছে। সামনে আরও অনেক ম্যাচ রয়েছে। সেগুলোতে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন কোচ মাহমুদ ইমন।

এ দিকে রংপুরের হয়ে হেলস সেঞ্চুরি করলেও সাইফ থেমেছেন ৮০ রানে। তবে সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ করেন না সাইফ। দলের জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলতে পেরেই তিনি খুশি। ম্যাচ শেষে সাইফ বলেছেন, ‘প্রথমে কিছুটা সময় নেওয়ার চেষ্টা করেছি। উইকেট ভালো ছিল। টিকে থাকতে পারলে এই উইকেটে রান তোলা যাবে, সেটি বুঝেছিলাম। বলের মেরিট অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছি।’ ব্যাট হাতে সফল হওয়ার জন্য সাইফ কাজ করেছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে। দেশসেরা কোচের থেকে পাওয়া বিভিন্ন টোটকা কাজে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এখনও কাজ করে যাচ্ছেন ব্যাটিং নিয়ে। যখনই যেখানে সুযোগ পাবেন, দলের জন্য তখনই প্রস্তুত বলে জানান সাইফ।

Sharing is caring!