স্পোর্টস ডেস্ক:
বাংলাদেশের জন্য যে সমীকরণ, এর ঠিক বিপরীত সমীকরণ আয়ারল্যান্ডের জন্য। বাংলাদেশ হারলেই সিরিজ জয়ের স্বপ্ন শেষ, বিপরীতে জিতলেই ইতিহাসের হাতছানি আইরিশদের সামনে। এই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে চাপকে জয় করে ‘সেন্সিবল’ ক্রিকেট খেললো সফরকারীরা। আর স্বাগতিকরা দেখলো হতাশার ব্যাটিং বিপর্যয়। যে বিপর্যয়ে পর্যদস্তু বাংলাদেশকে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারিয়ে ইতিহাসগড়া সিরিজ জয় করেছে আয়ারল্যান্ড। এই প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে হারালো তারা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ৪৭ রান হেরেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রথমটিতে তারা হেরেছিল ১২ রানে। এ ম্যাচে আয়ারল্যান্ড তুলেছিল ৫ উইকেটে ১৩৪ রান। হতশ্রী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ১৭.১ ওভারে অলআউট হয়েছে ৮৭ রানে।
ম্যাচে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ছিলেন আইরিশ অলরাউন্ডার ওর্লা প্রেনডারগাস্ট। ব্যাটিংয়ে ৩২ রানের পর বোলিংয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বড় স্কোরের পেছনে ছুটতে গিয়ে ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি গড়েছিলেন দিলারা আক্তার ও সোবহানা মোস্তারি। তারপরও সে ম্যাচে জয়ের নাগাল পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। আর এ ম্যাচে লক্ষ্যটা মাঝারি হলেও শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়। ২২ রান তুলতেই নেই ৪ উইকেট! জয়ের স্বপ্ন তো সেখানেই ফিকে।
সোবহানা মোস্তারি টিকলেন কেবল ৫ বল। ১ রান করে ডানহানি মিডিয়াম পেসার প্রেনডারগাস্টের বলে ক্লিন বোল্ড। প্রথম ম্যাচে ছয়বার জীবন পাওয়া দিলারা এবার আর সুবিধা করতে পারলেন না। ১০ বলে ১০ রান করে ওই প্রেনডারগাস্টের বলেই ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন টাইগ্রেস ওপেনার।
আগের ম্যাচের মতো এবারও ব্যর্থ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ৮ বলে ৬ রান করে তিনি বোল্ড কেলির বলে। ধাক্কা সামলানোর আগেই ডলজেলের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তাজ নেহার।
৪ উইকেটে ২২ রানের গর্ত থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন দুই ‘আক্তার’-শারমিন ও স্বর্ণা। দুজনের জুটিতে ওঠে ৪৮ রান। সেট হয়েও স্কোর বড় করতে ব্যর্থ হন স্বর্ণা। ২১ বলে ২০ রান করে ডিলানির বলে লুইসের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় হন তিনি। দ্রুতই বিদায় নেন ফাহিমা খাতুন (৬ বলে ৫)। রান আউটে কাটা পড়েন জাহানারা আলম (১ রান)।
টিম টিম করে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা শারমিন আক্তারও পারলেন না দলকে শেষ বন্দরে নিয়ে নোঙ্গর করাতে। ৪৩ বলে ৩৮ রান করে কেলির বলে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় শারমিনের লড়াকু ইনিংস। জান্নাতুল ফেরদৌস, নাহিদা আক্তার, সানজিদা আক্তার মেঘলা কারোর ব্যাটই পারেনি চাহিদা মেটাতে।
৭০ রান থেকে ৮৭ রানে যেতে বাকি ৬ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ! দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪৭ রানের জয় নিশ্চিত করে ইতিহাস গড়ে আয়ারল্যান্ড।
দারুণ বোলিংয়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং ভিত নাড়িয়ে দেন ওর্লা প্রেনডারগাস্ট। ৩.১ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আর্লিন কেলি ও লরা ডিলানি।
এর আগে প্রথম ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামে আয়ারল্যান্ড। তবে প্রথম ম্যাচের মতো এবার আর দাপুটে ব্যাটিং দেখাতে পারেনি সফরকারীরা। বাংলাদেশের টাইগ্রেসদের আঁটসাঁট বোলিং আইরিশ ব্যাটারদের তেমন স্বস্তি দেয়নি।
এরমধ্যেও ওপেনিং জুটিতে ৩৪ রান তুলে নেন অ্যামি হান্টার ও গ্যাবি লুইস। তাদের জুটি ভাঙেন নাহিদা আক্তার। দিলারার দারুণ এক ক্যাচে ফিরে যান অধিনায়ক গ্যাবি লুইস (১৮ বলে ১৪)। খানিক পরে একই পথ ধরেন অ্যামি হান্টার। জান্নাতুল ফেরদৌসের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে শেষ হয় তার ২৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস।
জুটি গড়ার চেষ্টা চালান ওর্লা প্রেনডারগাস্ট ও লিয়া পল। চালিয়ে খেলতে থাকা প্রেনডারগাস্টকে ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠছিলেন। এবারও জুটি ভাঙেন নাহিদা। তার বলে সানজিদা আক্তার মেঘলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ার আগে প্রেনডারগাস্ট খেলেন ২৫ বলে ৩টি চার ও ১টি ছয়ে ৩২ রানের ইনিংস।
লিয়া পলকে (১৯ বলে ১৬) ফেরান জাহানারা আলম। মিডল অর্ডারে নামা লরা ডিলানি ছিলেন আগ্রাসী। তার ব্যাটে আরও বড় স্কোরের স্বপ্ন বুনছিল আয়ারল্যান্ড। তবে তাকে বোল্ড করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি দেন ফাহিমা খাতুন। ফেরার আগে ২৫ বলে ৪টি চারে ৩৫ রান তুলে নেন ডিলানি।
সারাহ ফোর্বস (৬ বলে ৪) ও রেবেকা স্টকেল (৪ বলে ৯) থাকেন অপরাজিত। ৫ উইকেটে ১৩৪ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস।
বাংলাদেশের নাহিদা আক্তার ২টি, জান্নাতুল ফেরদৌস, জাহানারা আলম ও ফাহিমা খাতুন ১টি করে উইকেট নেন।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com