প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৭শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৭শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে একদিনে ৫ লাশ

editor
প্রকাশিত মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে একদিনে ৫ লাশ

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটে পৃথক ঘটনায় একদিনে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো এক ছাত্রদল নেতা। সড়কের পাশে থেমে থাকা ট্রাকের সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, কালারুকা ইউনিয়নের করছখালি গ্রামের নোয়াব আলীর পুত্র সৌদি আরব প্রবাসী যুবদল নেতা মো. শাহিনুর ইসলাম (৩৪) ও একই গ্রামের ফারুক মিয়ার পুত্র যুবদল নেতা হুমায়ুন রশিদ (৩২)। আহত ছাত্রদল নেতা আবিদ হুসাইন মিলন কালারুকা ইউনিয়নের লম্বাহাটি গ্রামের বাসিন্দা। তাকে নগরীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের ছাতকের মুক্তিরগাঁও নতুন ব্রিজ পয়েন্টে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, তারা তিনজন মোটরসাইকেল যোগে বিএনপির একটি ইফতার মাহফিলে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ওভারটেক করতে গিয়ে সড়কের পাশে বন্ধ অবস্থায় থাকা একটি ট্রাকের সাথে তাদের মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।এ ব্যাপারে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুখলেছুর রহমান বলেন, ইফতারের সময় দ্রুত গতিতে সিএনজি অটোরিকশাকে ওভারটেক করতে গিয়ে ট্রাকটির সাথে সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় ইতিকাফরত অবস্থায় এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। ঐ স্কুল শিক্ষকের নাম জুনেদ আহমদ। তিনি উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের গেচুয়া বড় মহল্লাহ বাসিন্দা ও গনিপুর-কামালগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক। আজ রোববার বিকেলে গেচুয়া বড় মহল্লা মসজিদে এই স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে উপজেলার শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জানা গেছে, তিনি ২০ রমজান থেকে মসজিদে ১০ দিনের জন্য এতেকাফ শুরু করেছিলেন তিনি। আজ বিকেলে হাঠৎ করেই তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করে মৃত ঐ স্কুল শিক্ষকের নিকটআত্মীয় আব্দুল্লাহ আল মামুন সামন বলেন, এই আকস্মিক মৃত্যুতে পুরো অঞ্চলজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসীসহ পুরো উপজেলার সবার কাছে তার খুবই অমায়ীক ও ভালো মানুষ হিসেবে খ্যাতি ছিলো।

সিলেট-তামাবিল সড়ক থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৪৫ থেকে ৫০ বছর। তবে তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় শাহপরান থানার ৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নের খাদিমপাড়া এলাকার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বাউন্ডারি ওয়ালের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে শাহপরান (রহ.) অফিসার ইনচার্জ কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তি ভবঘুরে ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু। তার লাশ দাফন করা হয়েছে।

সিলেটের বিশ্বনাথে একটি ফ্ল্যাট থেকে মশারির স্ট্যান্ডের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২৩ মার্চ) ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্বনাথ পৌরসদরের রামপাশা সড়কের একটি ফ্ল্যাট থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত আবদুল মুকিত (৩৫) উপজেলার মিরেরচর গ্রামের আব্দুস শহিদের ছেলে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা মনে করলেও নিহতের স্বজনদের দাবি- এটি হত্যাকাণ্ড। কারণ- লাশের শরীরের পেটে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া একটি পা মশারির স্ট্যান্ডের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিলো। পুলিশ জানায়, স্বজনদের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে রোববার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে রামপাশা সড়কের ওই ফ্ল্যাট থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মশারির স্ট্যান্ডের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মরদেহ ঝুলছিলো। নিহতের স্বজনরা জানান- আবদুল মুকিত বিশ্বনাথ পৌরসদরের একটি সুপারশপে চাকরি করতেন। রামপাশা রোডে তার প্রবাসী বোনের ফ্ল্যাট রয়েছে। সেখানে কোনো ভাড়াটে ছিলো না। এটি দেখাশুনা করতেন আবদুল মুকিত। শনিবার (২২ মার্চ) রাতে তিনি বাড়ি না ফেরায় তাঁর খোঁজ করতে শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। সেহরির সময় সিকিউরিটি গার্ড মারফত জানতে পারেন- ওই ফ্ল্যাটে বাতি জ্বলছে। পরে পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান। তবে দরজা-লাগোয়া জানালার গ্লাস খোলা ছিলো এবং সেই জানালা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দরজার ছিটকিনির নাগাল পেয়ে দরজা খুলে একটি কক্ষের মশারির স্ট্যান্ডের সঙ্গে মুকিতের ঝুলন্ত নিথর দেহ দেখতে পান। পেরে পুলিশে খবর দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ- এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধারের সময় মুকিতের ফোন নাম্বার সঙ্গে পাওয়া যায়নি। খুঁজে পাওয়া যায়নি ওই ফ্ল্যাটের চাবিও। এছাড়া শরীরে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে এবং দুই পা হাটু পর্যন্ত বিছানায় লেগেছিলো। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে জানা গেছে। বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন- এটি আত্মহত্যা হতে পারে। তবে লাশের ময়না তদন্ত হবে এবং ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Sharing is caring!