প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ভারত যেতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশের পর্যটকরা, মালদ্বীপ-থাইল্যান্ডে ভিড়

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১৪, ২০২৪, ০১:৫৮ অপরাহ্ণ
ভারত যেতে আগ্রহী নয় বাংলাদেশের পর্যটকরা, মালদ্বীপ-থাইল্যান্ডে ভিড়

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

চলতি বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে বাংলাদেশিদের জন্য পর্যটক ভিসা বন্ধ রেখেছে ভারত সরকার। ভিসা কবে চালু হবে এ বিষয়ে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটক ভারতের কলকাতা, দিল্লি, দার্জিলিং, সিকিম, মেঘালয়ে যেতেন। তবে ভিসা বন্ধের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোতে যাত্রীদের চাপ বাড়ছে।

এছাড়াও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম, ব্যবসায়িক দূর্নীতি, বাংলাদেশের উপর প্রত্যক্ষ খবরদারিসহ নানা কারণে পর্যটকরা ভারতমুখি হচ্ছেননা।

 

বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইন্সগুলো জানিয়েছে, ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের শুধুমাত্র শিক্ষা ও চিকিৎসা ভিসা চালু রয়েছে। পর্যটক ভিসা বন্ধ হওয়ায় দেশের এভিয়েশন খাতে বড় প্রভাব পড়েছে।

ভারত সীমিত আকারে ভিসা কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাই যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ভিসা থাকা সত্ত্বেও বিমানবন্দরে হয়রানি বা আটকের ভয়ে অনেকে ভারতমুখী হচ্ছেন না। ফলে দেশটির বিভিন্ন রুটে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সব এয়ারলাইন্স তাদের ভারত রুটের ফ্লাইট সংখ্যা ৩ ভাগের ১ ভাগে নামিয়ে এনেছে।

 

আকাশপথে যাত্রীতে ভাটা, বন্ধ হচ্ছে ভারতগামী বহু ফ্লাইট

 

তবে বর্তমানে ভারত বন্ধ থাকায় নতুন কয়েকটি রুটে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। সেগুলো হচ্ছে মালদ্বীপ, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, নেপালের কাঠমান্ডু এবং শ্রীলঙ্কা।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর ডিরেক্টর মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশনস মো. ইউনুছ বলেন, ভারতের টুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকার কারণে মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এই গন্তব্যগুলোতে টুরিস্টদের যাতায়াত বেড়েছে। সহজেই ভিসা পাওয়ার কারণে বর্তমানে মালদ্বীপ-শ্রীলঙ্কা প্যাকেজ (২ দেশ একসঙ্গে) সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে।

পাশাপাশি থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরের (একসঙ্গে ৩ দেশ) প্যাকেজও নিচ্ছেন অনেকে। এছাড়াও সহজ ভিসা প্রক্রিয়ার কারণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পর্যটক নেপালেও যাচ্ছেন

ট্যুর অপারেটররা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে সারাবছরই ভারতে পর্যটক যেত। নভেম্বর-ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে থেকে সবচেয়ে বেশি ট্যুর প্যাকেজ বিক্রি হতো কাশ্মীর এবং শিমলা-মানালির। তবে এ বছর ভিসা বন্ধের কারণে প্যাকেজ বিক্রি প্রায় শূন্যের কোটায়। অনেকের আগে থেকে ভিসা নেওয়া ছিল, তারা বিচ্ছিন্নভাবে ভারত যাচ্ছেন। যারা নিয়মিত পর্যটনের জন্য দেশের বাইরে যেতেন তারা বিকল্প দেশে যাচ্ছেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বর্তমানে এই দুই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের সব রুটের ফ্লাইট সংখ্যা কমানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কলকাতার ফ্লাইটটিও আপাতত বন্ধ আছে। এই রুটে পর্যটক নেই বললেই চলে। তবে ভারতে যেতে না পেরে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ব্যাংকক এবং মালদ্বীপে যাচ্ছেন। এই দুই রুটের ফ্লাইটে পর্যটকের চাপ অনেকাংশে বেড়েছে।

বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটনকেন্দ্রিক দেশগুলোর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কাঠমান্ডু, ব্যাংকক, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ব্যাংকক, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স ও ফিটস এয়ার কলম্বোতে, মালদিভিয়ান, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স, থাই এয়ারওয়েজ, বাটিক এয়ার এবং এয়ার এশিয়া ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

এসব এয়ারলাইন্সে সিঙ্গাপুরের ইকোনোমি ক্লাসের রিটার্ন ভাড়া প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা, মালয়েশিয়া ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা, ব্যাংকক ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা, মালদ্বীপ ৪৫ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকা, কাঠমান্ডু ৩২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার, শ্রীলঙ্কা ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

দূরত্বের দিক দিয়ে ভারতের পর বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে কাছের পর্যটনকেন্দ্রিক দেশ নেপাল। দেশটিতে বর্তমানে ঢাকা থেকে দুইটি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং নেপালের হিমালয়া এয়ারলাইন্স। এই দুই এয়ারলাইন্সই বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করে।

তারা জানায়, তাদের কাঠমান্ডু ফ্লাইটে প্রতিদিন ৮০ শতাংশের বেশি যাত্রী চলাচল করছে, যার মধ্যে অধিকাংশই সবাই পর্যটক। বাকিরা কাঠমান্ডু হয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ বোসরা ইসলাম জানান, ভারত রুটে ভিসা বন্ধের কারণে ব্যাংককসহ বেশ কয়েকটি রুটে যাত্রী বেড়েছে। কাঠমান্ডু রুটেও যাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে।

Sharing is caring!