প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৩০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৩০শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

ভয়াবহ খাদ্য সংকটে গাজায় ফিরে আসা ফিলিস্তিনিরা

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৮, ২০২৫, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ
ভয়াবহ খাদ্য সংকটে গাজায় ফিরে আসা ফিলিস্তিনিরা

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

ভয়াবহ খাদ্য সংকটে পড়েছেন গাজায় ফিরে আসা ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর শনিবার ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এরপরেই ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত নেৎজারিম করিডোর অতিক্রম করে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। এরই মধ্যেই উত্তর গাজায় পৌঁছেছেন ৩ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

অনেকেই পরবর্তীতে উত্তর গাজা থেকে গাজা সিটিতে আসা শুরু করেন। কিন্তু সেখানে খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা যে পরিমাণ ত্রাণ সরবরাহ করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।

 

দক্ষিণ গাজা থেকে গাজা সিটিতে আশ্রয় নেওয়া আহমেদ সুকের নামের এক ফিলিস্তিনি বলেন, আমরা আশা করছি বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা এখানে আরও সহায়তা দেবে। এখানে আরও বেকারি স্থাপন করা দরকার কারণ লোকজন অনেক বেশি। এখানে খাবার আনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

খলিল আলওয়ান নামের অপর এক ফিলিস্তিনি বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে যে কয়েকটি বেকারি আছে তা ফিরে আসা বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের জন্য যথেষ্ট নয়।

 

তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা ফিরে আসায় এখানে সংকট তৈরি হয়েছে। সে কারণে এক টুকরো রুটি পাওয়ার জন্য আমাদের খুব বেগ পেতে হচ্ছে। ওই ফিলিস্তিনি নাগরিক আরও বলেন, একটু রুটির জন্য আমাদের ভোর থেকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আমরা যদি রুটির জন্য কয়েক ঘণ্টা আবার পানির জন্য কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করি তবে দিনই শেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে আমরা স্থিতিশীল হতে পারবো না। এটা সত্যিই একটা ভয়াবহ সংকট।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের পর অবশেষে বাড়ি ফেরার সুযোগ পেয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু তাদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। আবার ফিরে আসার পর কোথায় থাকবেন, কী খাবেন তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে পায়ে হেঁটে আল-রশিদ স্ট্রিট এবং সকাল ৯টা থেকে গাড়িতে করে সালাহ আল-দিন স্ট্রিট অতিক্রম করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার ‍মুখে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় এসব ফিলিস্তিনি নাগরিককে গাজার এক স্থান থেকে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে।

 

ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উত্তর গাজায় এখন কোনো বাড়িঘরই অক্ষত নেই। কিন্তু তারপরও প্রায় ১৫ মাস পর নিজেদের এলাকায় ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত উত্তর গাজার বাসিন্দারা। সোমবার সকাল থেকেই নেৎজারিম করিডোর দিয়ে উত্তর গাজায় আসতে শুরু করেন ফিলিস্তিনিরা। অনেকেই ঘোড়া কিংবা গাধার গাড়িতে নিজেদের মালপত্র নিয়ে আসেন। এ সময় উত্তর গাজার কেন্দ্রীয় শহর গাজা সিটির প্রধান সড়কের একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে ‘গাজায় স্বাগতম’ লেখা ব্যানার টাঙানো দেখা যায়।

 

গাজায় হামাসের এক মুখপাত্র এএফপিকে জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় ফিরে আসা বাড়িঘর হারানো এই ফিলিস্তিনিদের সাময়িক আশ্রয় হিসেবে অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার তাঁবু প্রয়োজন।

Sharing is caring!