প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৪ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সংস্কারের প্রতিবেদন দিতে প্রস্তুত চার কমিশন

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৯:৪২ পূর্বাহ্ণ
সংস্কারের প্রতিবেদন দিতে প্রস্তুত চার কমিশন

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

আগামী বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে চারটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা হতে পারে। ওই দিন পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের জন্য সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা আছে। জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগের জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে বেশি মনোযোগ সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থার দিকে।

গুরুত্বপূর্ণ এ দুই বিষয়ে কী ধরনের সংস্কার হবে তার ওপরই অনেকাংশে নির্ভর করবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাওয়া নতুন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। এমন ধারণা অনেকের। এই দুই সংস্কার কমিশনের কাছে জমেছে প্রস্তাবের পাহাড়। সেসব প্রস্তাবে ব্যাপক পরিবর্তনের দাবি রয়েছে।

 

দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন বন্ধ করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফেরা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া এবং নারীদের সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব অনেকের। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথাও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। সংবিধানসংশ্লিষ্ট সংস্কারে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই সুপারিশ প্রস্তুত করছে কমিশনগুলো। দুদককে আমলাতন্ত্রমুক্ত করে ঢেলে সাজানোর জন্য নানা প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে দুদক সংস্কার কমিশন।

 

এই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে কমিশনগুলোর প্রধানদের নিয়ে ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’। এই কমিশনের মাধ্যমে সংস্কারের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ করার চেষ্টা হতে পারে। একই সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথনকশাও ঘোষণার সিদ্ধান্ত হতে পারে এ মাসেই।

 

গত ১৬ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা অন্তর্বর্তী সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, তা বিবেচনা করে আমি এই কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করব। আমার সঙ্গে এই কমিশনের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

 

কমিশন প্রয়োজন মনে করলে নতুন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে। প্রথম ছয় কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগামী মাসেই (চলতি মাস) জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি। এই নতুন কমিশনের প্রথম কাজ হবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যেসব সিদ্ধান্ত জরুরি, সেসব বিষয়ে তাড়াতাড়ি ঐকমত্য সৃষ্টি করা এবং সবার সঙ্গে আলোচনা করে কোন সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ চূড়ান্ত করা।’ এ অবস্থায় ছয়টি কমিশনের মধ্যে চারটি কমিশনের প্রতিবেদন পেয়েই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন হবে কিনা সে বিষয়টি এখনো অষ্পষ্ট।

 

গত ৯ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন সংস্কারসাপেক্ষ। এটি প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে এরই মধ্যে দেখেছেন। আমরা আশা করি, সংস্কার কমিশনগুলোর রিপোর্ট এ মাসের মধ্যে পাব। প্রথম যে ছয়টি কমিটি হয়েছিল, সেগুলো নির্বাচনসংশ্লিষ্ট। এই কমিশনগুলো যে প্রস্তাব দেবে, সেগুলো নির্বাচনকেন্দ্রিক। প্রস্তাবগুলো নিয়ে আমরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করব। এই প্রক্রিয়ায় প্রবেশের পর রাজনৈতিক দলগুলো আসলে ঠিক করবে কতটা সংস্কার চাই। ওই সংস্কারের মেয়াদ বা পরিধির ভিত্তিতে আমি মনে করি নির্বাচনের তারিখ ঠিক হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টা স্পষ্ট হবে।’

 

এদিকে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।

 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচনব্যবস্থা, সংবিধান, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন। গত ৩ অক্টোবর এই ছয় কমিশনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়া অন্য পাঁচটি কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ৬ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় সংবিধান সংস্কার কমিশনের। কমিশনগুলোকে ৯০ দিনের মধ্যে সরকারপ্রধানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। পরে পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের জন্য আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগের জন্য সময় বাড়ানো হয় আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

 

এ ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিতে গত ১৮ নভেম্বর নতুন আরো পাঁচটি সংস্কার কমিশন গঠন চূড়ান্ত করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এগুলো হচ্ছে গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারীবিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। এই পাঁচটি কমিশনকে ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং এসব কমিশনের কাজে এখনো তেমন গতি আসেনি।

 

নির্বাচনব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তনের তোড়জাড় :

 

ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূল পর্যায়ে ভোটের ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব রাখতে যাচ্ছে। এ ছাড়া দলে কমপক্ষে তিন বছর সদস্য না থাকলে প্রার্থী হওয়া যাবে না—এই বিধান আবার ফিরে আসতে পারে। সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের আয়োজন এবং পর্যায়ক্রমে দেশের সব এলাকায় নারী আসন নির্ধারণ করা হতে পারে। ওইসব আসনে কোনো পুরুষ প্রার্থী থাকবেন না। জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে জোটভুক্ত দলগুলোর প্রার্থীদের নিজ নিজ দলের প্রতীক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাবও গুরুত্ব পাচ্ছে। কমিশনের সদস্যরা এসব প্রস্তাব যৌক্তিক মনে করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ টি এম শামসুল হুদার নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধান আইন দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বেশ কিছু বিধান যুক্ত করেছিল। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ সেগুলো বাতিল করে। সংস্কার কমিশন সেই বাতিল বিধানগুলো আবার ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দেবে বলে দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ক্ষেত্রে উচ্চকক্ষের জন্য প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণের প্রস্তাব রাখবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। নিম্নকক্ষের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি বাধ্যতামূলক হবে না। এ ছাড়া নির্বাচনে সঠিক দায়িত্ব পালন না করলে নির্বাচন কমিশনারদের জবাবদিহির সম্মুখীন করা হবে। নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ আইনে এসংক্রান্ত একটি বিধান রাখার প্রস্তাব দেবে সংস্কার কমিশন।

 

এই কমিশনের সদস্য বেগম জেসমিন টুলি বলেন, ‘আমরা ১৫ জানুয়ারিতেই আমাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে।’

 

 

সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত

 

সংবিধান সংস্কার কমিশন আগামী বুধবার কমিশনের সুপারিশসংক্রান্ত প্রতিবেদন সরকারের কাছে হস্তান্তরের লক্ষ্যে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে। এই সুপারিশে বহুল আলোচিত সংবিধান পুনর্লিখন প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো সুপারিশ থাকছে না। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে কমিশন মনে করছে।

সংস্কার কমিশনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সংস্কার প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টির বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রস্তাব করা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ নিয়েও নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এমনকি প্রার্থীদের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ২১ বছর করা হতে পারে। সংরক্ষিত নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুপারিশ আসতে পারে। এ ছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালুসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কমিশনের ভাবনায় রয়েছে।

জানা যায়, সংস্কার কমিশন এরই মধ্যে বাংলাদেশের সংবিধান ছাড়াও ১২০টি দেশের সংবিধান পর্যবেক্ষণ করেছে। কমিশন গত ১১ নভেম্বর থেকে অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক শুরু করে। এরই মধ্যে ২৫টি রাজনৈতিক দল ও তিনটি রাজনৈতিক জোটের মতামত নিয়েছে। কমিশন সদস্যরা ৪৩টি সংগঠন, সুধীসমাজের ২৩ জন প্রতিনিধি, সাতজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ, ২১ জন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং ১০ জন তরুণ চিন্তাবিদসহ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ৫৭৩ জন মতামত দিয়েছেন। গত ৫ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মাধ্যমে পরিচালিত খানা জরিপে ৪৫ হাজার ৯২৪ জন মতামত দিয়েছেন।

এ বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘অংশীজনদের কাছ থেকে সংগৃহীত মত এবং কমিশনের সব সদস্যের মত একত্র করে সুপারিশ তৈরি করা হচ্ছে। জনমতকে প্রাধান্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে সুপারিশমালায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিভিন্ন অংশীজনের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনের মতামতসহ তা সুপারিশ আকারে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে সুপারিশ চূড়ান্ত এবং সুপারিশ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ঠিক করা হবে। সংবিধান পুনর্লিখনের বিষয়টিও রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্তের বিষয়।’

 

পুলিশ সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট প্রায় প্রস্তুত :

 

পুলিশ সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট প্রায় প্রস্তুত। আগামী ১৫ জানুয়ারি তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে বলে জানা গেছে। কমিশনের সুপারিশে বেশ কিছু জনবান্ধব বিষয় থাকছে। এর মধ্যে মানবিক পুলিশ গঠনের বিষয়েই বেশি সুপারিশ থাকছে বলে কমিশনের এক সদস্য জানিয়েছেন।

 

গত ৩ অক্টোবর পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠনের পর গত ৩১ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং ওই কমিশনের সদস্যসচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত ‘কেমন পুলিশ চাই’ শিরোনামে জনমত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে কমিশনের ওয়েবসাইটে মতামত চাওয়া হয়। সেখানে ১৭টি প্রশ্নের মধ্যে অন্যতম ছিল ৫৪ ধারা থাকবে কি না? এ ছাড়া জনবান্ধব, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ আধুনিক, নিত্যনতুন অপরাধ শনাক্তে উন্নত প্রশিক্ষণ, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নিরপেক্ষ আইনের শাসনের প্রতি অনুগত বিষয়েও মতামত পাঠিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

সূত্র জানায়, পুলিশ সংস্কার কমিশনে পুলিশকে যাতে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা না যায় সে কারণে একটি কমিশনের সুপারিশ করার কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে কার্যকর একটি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়েও সুপারিশ করতে যাচ্ছে কমিশন।

 

যে কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বাড়ল :

 

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে কমিশনপ্রধান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠান। এতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের পর একটি জনমুখী, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত ৯ অক্টোবর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপনে কমিশনকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হয়েছে।

 

জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধিসহ জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুধাবনের লক্ষ্যে কমিশন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগ, ছয়টি জেলা এবং চারটি উপজেলা সফর করে অংশীজনদের মতামত ও পরামর্শ সংগ্রহ করেছে। কমিশন এ পর্যন্ত ২০টির বেশি সভা করেছে। লক্ষাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে জনপ্রশাসন সংস্কার সংশ্লিষ্ট প্রাপ্ত অনলাইন মতামত ও নাগরিক পরিষেবা সম্পর্কে নাগরিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সুনির্দিষ্ট অভিমত এখনো প্রক্রিয়াধীন। তা ছাড়া কমিশনের সদস্যরা ৬ থেকে ৭ জানুয়ারি কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা এবং মতলব উপজেলার অংশীজন এবং মাঠ পর্যায়ে কর্মরত বিভিন্ন বিভাগের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছেন, যা পর্যালোচনা করে কমিশনের দেওয়া সুপারিশে অন্তর্ভুক্ত করার কাজও চলমান আছে।

Sharing is caring!