প্রজন্ম ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের মামলাগুলো তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশের বিশেষায়িত দুই ইউনিটকে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এসব মামলা অধিকতর তদন্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেবে। যার প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। সিআইডি ও পিবিআইয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা মহানগর তথা রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া হত্যাসহ গুরুতর অভিযোগের ৮৭টি মামলা তদন্তের জন্য এরই মধ্যে ওই দুটি সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে পিবিআইকে ৪০টি ও সিআইডিকে ৪৭টি মামলা তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে। এ দুটি ইউনিটে এরই মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে তদন্তের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
সংস্থা দুটির কর্মকর্তারা জানান, গত জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে হত্যাযজ্ঞ ও তাণ্ডব চালানো হয়, সেগুলোর বিষয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন থানায় পর্যায়ক্রমে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু মামলা হয়েছে আদালতে। এর মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে অনেক মামলার তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ। কিছু মামলায় আসামিও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মামলাগুলো সঠিকভাবে আরও নিবিড়িভাবে তদন্তের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সিআইডি ও পিবিআইকে বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিআইডির ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা মেট্রো) জিয়াউল হক বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে হতাহতসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা তদন্তের জন্য আমাদের কাছে এসেছে। এসব মামলা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।’
একই প্রসঙ্গে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া) আবু ইউছুফ বলেছেন, ‘ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া ওই সময়ের (বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন) ৪০টি মামলা তদন্তের জন্য পিবিআই দায়িত্ব পেয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরের বাইরেও দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়ের হওয়া ওই জাতীয় আরও কিছু মামলা পিবিআইয়ের কাছে আসছে। পিবিআই সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে মামলাগুলোর তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করেছে।’
সিআইডি ও পিবিআইয়ের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর ছাড়াও সারা দেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনায় করা ওই সব গুরুত্বপূর্ণ মামলা পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে পিবিআই ও সিআইডির কাছে পাঠানো হয়েছে। সংস্থা দুটি এসব মামলার মধ্য থেকে যেগুলো বেশি স্পর্শকাতর বা অধিক গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো নিয়ে এর মধ্যে কাজ শুরু করেছে।
এসব মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান প্রসঙ্গে কর্মকর্তারা বলেছেন, বেশ কিছু আসামি ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ দুটি ইউনিট মামলাগুলো গোড়া থেকে তদন্ত শুরু করে প্রকৃতপক্ষে যারা জড়িত তাদের কেবল আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। তবে আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চালাতে গেলে অনেক সময় বেগ পেতে হচ্ছে। যার অন্যতম সমস্যা হচ্ছে- পর্যাপ্ত জনবল না থাকা, ‘মব জাস্টিস’, যানবাহনের সংকট অন্যতম। তা সত্ত্বেও অধিক গুরুত্ব দিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতের মামলাগুলোর তদন্তকাজ শুরু করা হয়েছে।
Sharing is caring!