প্রজন্ম ডেস্ক:
দেশে গত জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে অর্ধকোটি গ্রাহক হারিয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো। পাশাপাশি চলতি বছরের জুন মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরে প্রায় ৩৬ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জুন মাসে মোট মোবাইল সিমের গ্রাহক ছিলেন ১৯ কোটি ৬০ লাখ, যা সেপ্টেম্বর মাস শেষে কমে দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৮ লাখে। গত সোমবার বিটিআরসি এ তথ্য দেয়।
হিসাব বলছে, গ্রামীণফোন অপারেটরের গ্রাহক গত জুন মাসে ছিল ৮ কোটি ৫৫ লাখ, যা সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪৮ লাখে অর্থাৎ তাদের গ্রাহক কমেছে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। রবি আজিয়াটার গ্রাহক গত জুন মাসে ছিল ৫ কোটি ৯৫ লাখ, যা সেপ্টেম্বরে দাঁড়ায় ৫ কোটি ৭৮ লাখে। ফলে তাদের গ্রাহক কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ লাখেরও বেশি। এ হিসাবে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক কমেছে বাংলালিংকের। তাদের গত জুন মাসের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৪৪ লাখ, যা সেপ্টেম্বরে হয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ। অর্থাৎ তাদের গ্রাহক কমেছে প্রায় ২৯ লাখ। তবে অন্য অপারেটরদের তুলনায় বেশ কম গ্রাহক হারিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর টেলিটক।
অন্যদিকে চলতি বছরের জুনে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ২০ লাখের মতো। এরপর থেকে তা কমতে থাকে। বিশেষ করে গত সেপ্টেম্বরে প্রায় ৩৬ লাখ গ্রাহক কমে তা নেমে আসে ১৩ কোটি ৮৬ লাখে।
এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক গত জুন মাসে ছিল ১২ কোটি ৯০ লাখ, যা আগস্ট মাসে নেমে এসেছে ১২ কোটি ৬৮ লাখে এবং সেপ্টেম্বরে হয়েছে ১২ কোটি ৪৮ লাখ।
মোবাইল গ্রাহক কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সম্প্রতি সিম কর ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা নির্ধারণ করার বিষয়টিকে দায়ী করেছেন রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম। তিনি বলেন, ‘সিমের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ নতুন সংযোগ গ্রহণে কম আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’
সাহেদ আলম আরও বলেন, ‘এর ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সংযুক্ত রাখাটা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ছে।’ তিনি জানান, খরচ বাড়ার কারণে প্রয়োজনে বিকল্প সংযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেকের মধ্যে অনীহা তৈরি হয়েছে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, ‘এই সংকটকালে আমরা আমাদের গ্রাহকদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট রিচার্জ, জরুরি ব্যালেন্স গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় সেবাগুলো সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছি, যাতে তারা এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিগুলো মোকাবিলা করতে পারেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির টেকসই প্রকিউরমেন্ট কৌশল শুধু নিজস্ব কার্যক্রমে মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি আমাদের সাপ্লাই চেইনের অংশীদারদের পর্যন্ত বিস্তৃত, যারা সক্রিয়ভাবে টেকসই পদ্ধতির অনুশীলন করছেন।’
টেলিটকের বিক্রয় ও বিতরণ এবং সিআরএম কর্মকর্তা সালেহ মো. ফজলে রাব্বী বলেন, ‘ইতোমধ্যে অক্টোবর থেকে টেলিটকের গ্রাহক বাড়ছে। সম্প্রতি আমাদের চালু করা জেন জি সিমে আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে সিমের গ্রাহকের সংখ্যা আরও বাড়বে।’ সঙ্গে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা অপরিবর্তিত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট গ্রহকের সংখ্যাও দ্রুতই বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।’
Sharing is caring!