প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কুলাউড়ায় প্রকল্পের টাকা ছাত্রলীগ নেতার পেটে!

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১১, ২০২৪, ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ
কুলাউড়ায় প্রকল্পের টাকা ছাত্রলীগ নেতার পেটে!

কুলাউড়া প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও পীরের বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. নাহিদুল ইসলাম সোয়েবের বিরুদ্ধে বাজারের উন্নয়নকাজ না করেই প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কাজের অসম্পূর্ণ টাকা ফেরতে সোয়েবকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় হাজীপুর ইউনিয়নের পীরের বাজারে মাটি ভরাট ও ড্রেন সংস্কার প্রকল্পের কাজের জন্য ৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। সেই প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেন প্রকল্প কমিটির সভাপতি নাহিদুল ইসলাম সোয়েব।

ব্যবসায়ীদের দাবি, সোয়েব প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেননি। বরং তিনি ইউপি সদস্য গোলজার আহমদসহ কয়েকজনের জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে ভুয়া প্রকল্প কমিটি তৈরি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি জানতে পেয়ে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির সকল সদস্য সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে ইউএনও বিষয়টি সরেজমিন তদন্তের জন্য পিআইওকে দায়িত্ব দেন। পিআইও সরেজমিন তদন্ত করে এর সত্যতা পান।

পীরের বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারেক আহমদ বলেন, বাজার সংস্কারের জন্য সাবেক এমপি বরাদ্দ দিয়েছেন। অথচ আমিসহ আমাদের কমিটির কেউই বিষয়টি জানতাম না। বাজার সংস্কারের ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা সভাপতি সোয়েব বাজারে কোনো কাজ না করেই টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। তিনি সভাপতির বিচার দাবি করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলজার আহমদ বলেন, সোয়েব আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি তিনি পিআইওসহ প্রশাসনকে জানিয়েছেন। তিনিসহ যাদের ভুয়া স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে তারা দ্রুত সোয়েবের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও জানান।

হাজীপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল বলেন, সোয়েব এটি অন্যায় করেছেন। সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে তিনি পুরো বাজারের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত।

অভিযোগ এবং পিআইওর তদন্ত সঠিক নয় দাবি করে অভিযুক্ত পীরের বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. নাহিদুল ইসলাম সোয়েব বলেন, আমি বাজারে কাজ না করালে পিআইও টাকা দিলেন কীভাবে? প্রকল্পের কমিটিতে কারও ভুয়া স্বাক্ষর আছে বলে আমার জানা নেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. শিমুল আলী বলেন, সরেজমিন তদন্তে সোয়েবের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের সত্যতা মিলেছে। টাকাগুলো ফেরতে তাকে ১ সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি সরকারি কোষাগারে টাকা ফেরত না দিলে তার বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে পিআইওকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।

Sharing is caring!