প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

ম্যাজিস্ট্রেট সেজে চিকিৎসকের সঙ্গে ডিম ব্যবসায়ীর প্রেম, অতঃপর..

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ২, ২০২৫, ১২:৩৪ অপরাহ্ণ
ম্যাজিস্ট্রেট সেজে চিকিৎসকের সঙ্গে ডিম ব্যবসায়ীর প্রেম, অতঃপর..

রাজশাহী প্রতিনিধি:

তানজিম খান তাজ ওরফে নিরব (৩০)। পেশায় ডিম ব্যবসায়ী। ম্যাজিস্ট্রেট সেজে প্রেমের সম্পর্ক করেন এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে। পরিচয় জানতে পেরে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায় পরিবার। একপর্যায়ে তিনি সহযোগীদের নিয়ে তাকে অপহরণ করেন। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ভোরে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহৃত চিকিৎসকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।

মঙ্গলবার রাতে পার্শ্ববর্তী পাবনা সদর উপজেলার মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে র‍্যাব। এ সময় চারজনকে গ্রেপ্তার ও অপহরণ কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। ভুক্তভোগীর নাম শাকিরা তাসনিম দোলা (২৬)। তিনি রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে ডেন্টাল বিডিএস শেষ করেছেন। তাঁর বাবার নাম আবু তাহের খুরশিদ বকুল। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত সেকশন অফিসার।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- অপহরণকাণ্ডের মূল হোতা তানজিম খান তাজ, তিনি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তার সহযোগী সুজানগর উপজেলার চর গোবিন্দপুর গ্রামের সেলিম মল্লিক (৩৫), সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার বড়ংগাইল গ্রামের সজিব হোসেন (২৩) ও মাইক্রোবাসচালক আশরাফুল ইসলাম (৩৫), তার বাড়ি সুজানগর উপজেলার বদনপুর গ্রামে।

বুধবার র‍্যাব-৫ এর রাজশাহীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অপহরণের ঘটনাটি জানাজানি হলেই র‍্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র‍্যাব-৫ এবং র‍্যাব-১২ এর যৌথ আভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে পাবনা থেকে ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে এবং চারজনকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, তানজিম পেশায় ডিম ব্যবসায়ী। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার আসল পরিচয় জানতে পেরে পরিবার বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এই কারণেই তানজিম ওই চিকিৎসককে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ডা. শাকিরা নগরীর চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন। গত ৩০ ডিসেম্বর ফজরের আজানের পর শাকিরার বাবা আবু তাহের খুরশিদ বকুল নামাজের জন্য মসজিদে যেতে বাড়ি থেকে বের হন। তিনি পাঁচতলা বাড়ির প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বের হন। ওই সময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা অপহরণকারীরা তাকে জিম্মি করে চাবি কেড়ে নেয়। এরপর বাড়ির দোতলায় উঠে তারা শাকিরাকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামান। বাধা দিতে গেলে শাকিরার মা রেহেনা পারভীন ওরফে শিউলিকে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেয়া হয়। তারা মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর বিছানায় ফেলে গলা চেপে ধরে। তিনি পড়ে গেলে বাবা-মেয়েকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

গাড়িতে তোলার পরই মুখ বেঁধে ইনজেকশন পুশ করা হয়। বকুলের চেতনা ফিরে এলে তাঁকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় মহাসড়কের পাশে নামিয়ে দেয়া হয়। আর শাকিরাকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে বকুল সলঙ্গা থানা-পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে ফিরে আসেন। রাতে তিনি থানায় মামলা করেন।

Sharing is caring!