
স্টাফ রিপোর্টার:
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ‘ধর্ষণ’ শব্দটি এড়িয়ে চলার বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। তবে এবার বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডিএমপি কমিশনার।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। সেই সঙ্গে নিজের সেই বক্তব্যের বিষয়টিও স্পষ্ট করেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে দুঃখ প্রকাশ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রসঙ্গে আলোচনাকালে ধর্ষণকে বৃহত্তর পরিসরে নির্যাতন হিসেবে অভিহিত করেছি। আমার বক্তব্যে কেউ মনঃক্ষুণ্ন হলে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
এর আগে গত শনিবার (১৫ মার্চ) গণপরিবহণে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘হেল্প’ অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমি দুটো শব্দ খুব অপছন্দ করি, এর মধ্যে একটি হলো ধর্ষণ। আপনাদের কাছে অনুরোধ, এটি ব্যবহার করবেন না। আপনারা ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ বলবেন। আমাদের আইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন বলা হয়েছে। যে শব্দগুলো শুনতে খারাপ লাগে, সেগুলো আমরা না বলি।’
তার এই বক্তব্যের পরপরই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা পুলিশের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার এমন মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ডিএমপি কমিশনারের এই বক্তব্য বাস্তবে ধর্ষকদের পক্ষ নেওয়ার শামিল।
তিনি মনে করেন, এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এ ধরনের মন্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত।
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায়।
সবশেষ রোববার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানায়, ধর্ষণ ধর্ষণই, তা ৮ বছর বয়সি শিশু বা ৮০ বছর বয়সি বৃদ্ধা, যে কারও ক্ষেত্রেই হোক না কেন। এই ধরনের জঘন্য অপরাধকে তার যথাযথ নামেই ডাকা উচিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহিংসতা সহ্য করবে না।
Sharing is caring!