ভাই খুনের দায়ে গ্রেফতার বড় ভাই আব্দুল কাদির
স্টাফ রিপোর্টার:
তাদের পরিবার ছিল যৌথ। বাবা-মা আছেন, সবাই মিলেমিশে থাকতেন। সংসারে অভাব থাকলেও বনিবনা ছিল বেশ ভালো। একসময় সংসার বড় হওয়ার পাশাপাশি খরচও বাড়তে থাকে। এতে ওই পরিবারে নামতে থাকে কলহ। সংসারের দৈনন্দিন খরচ নিয়ে শুরু হয় মানোমালিণ্য। মাস দু’য়েক পূর্বে থেকে ছোট ভাই আদিল হোসেন টমটম চালানো শুরু করেন। কিন্তু টমটমের আয়ে বড় ভাইকে চাহিদামত সহায়তা করা সম্ভব হয়না তার। এ নিয়ে ঝগড়া -দূরত্ব আরো বৃদ্ধি পায়। এতে যোগান দেন পরিবারের গৃহবধূরা। পুরুষের ক্ষোভের আগুনে তাপ দিতে থাকেন ওই পরিবারের নারীরা।
শুরু হয় সাংসারিক কলহ। যা শেষ পর্যন্ত একটি পরিবারকে তছনছ করে দেয়। বিয়ানীবাজারের এক যৌথ পরিবারের হাসি-কান্না-দূর্দশার বাস্তবচিত্র এটি। উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ দুবাগ গ্রামে ঘটে যাওয়া মখলিছ হোসেন (ওই সন্তানদের হতভাগা পিতা) নামীয় এক গৃহকর্তার কপালে লেখা দূর্ভোগের মর্মস্পর্সী প্রতিচ্ছবি এখন মানুষের মুখে-মুখে।
গত বুধবার ওই পরিবারের বড় ভাই সংসার খরচ নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে ছোট ভাই আদিল হোসেনকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন। এ ঘটনার পর পলাতক বড় ভাই আব্দুল কাদিরকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শিমুল রায় জানান।
পুলিশ জানায়, স্বামী নিহতের ঘটনায় নিহত আদিল হোসেনের স্ত্রী সুবানা বেগম বাদি হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-৬/২৪) দায়ের করেন। বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি রেকর্ড করার পর তাকে আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।
দুবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল আহমদ বলেন, একটি সুখের সংসার নিমিষেই তছনছ হয়ে গেল। আসলে টাকার কারণে মানুষ কখন যে কী করে তা বলা মুশকিল। তিনি জানান, ওই পরিবারে সুখের ঘাটতি ছিলনা। কেবল টাকার অভাব ছিল।
স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান জানান, ৫ ভাইয়ের যৌথ সংসার ছিল তাদের। ৩ ভাই বিয়ে করেছেন। নিহত ব্যক্তি পরিবারের ৩ নাম্বার সন্তান। যিনি খুন করেছেন তিনি ২ নাম্বার, রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন।
এলাকা সূত্র জানায়, প্রায় বছর দেড়েক আগে বিয়ে করেছেন আদিল হোসেন। তার ৩ মাসের এক সন্তান রয়েছে। গ্রেফতার কাদিরের স্ত্রী জানান, আসলে ভাইকে মারার পর সে মরে যাবে, সেটা ভাবেননি তিনি। এখন খুব অনুতপ্ত। স্নেহের ছোট ভাই নিহত হওয়ার পর দাফনে অংশ নিতে না পেরে জ্ঞান হারান কাদির।
Sharing is caring!