প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

৬ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি শেওলা কাস্টমস

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ১২:২১ অপরাহ্ণ
৬ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি শেওলা কাস্টমস

 

স্টাফ রিপোর্টার:

সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ে বিয়ানীবাজারের শেওলা কাস্টমস চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছে অন্তত: ১০ কোটি টাকা। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৩০ কোটি ৮৬ হাজার টাকা। সর্বশেষ ক্যালেন্ডার বছরের (২০২৪ সালের) শেষ দিনেও লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক রাজস্ব আহরণ করতে পারেনি শেওলা কাস্টমস।

 

তবে শেওলা কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি অর্থবছরের শুরুতে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বেশ কয়েকদিন পণ্য শুল্কায়ন থেকে খালাস প্রক্রিয়া পুরোদমে ব্যাহত হয়। যার প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ে। তাছাড়া উচ্চ শুল্কের পণ্য বিশেষ করে বিলাসী পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আয় কম হয়েছে। যে কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়নি। তাছাড়া শেওলা কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার তৎপরতা বাড়ানোর কারণে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি কমেছে। আবার খালাসেও রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নিতে পারেনি সুযোগসন্ধানীরা। ফলে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আয়ে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

 

শেওলা কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, এই বন্দর দিয়ে ২৭ কোটি টাকার কয়লা, আদা, কমলা, আপেল, সাতকড়া, চুনাপাথর ও চাল আমদানি হয়েছে। মূলত নতুন বছরের প্রথম মাস হওয়ায় আগের মাসের বকেয় রাজস্ব আদায় হওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আদায় দেখা গেছে, যা প্রকৃত চিত্র নয়। প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় আগস্ট মাস থেকে।

কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, বাজারে ডলারের দাম বাড়ার কারণে অনেক ব্যবসায়ী আমদানির এলসি (ঋণপত্র) খুলতে পারেননি। যারা এলসি খুলেছেন তাদের অনেককে খোলা মার্কেট থেকে বেশি দামে ডলার কিনে ব্যাংকে শতভাগ মার্জিন দেখিয়ে ঋণপত্র খুলতে হয়েছে। ফলে সামগ্রিক নেতিবাচক একটি প্রভাব পড়েছে আমদানিতে। তাছাড়া গত দুই-তিন মাস ধরে উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি কমে গেছে। কিছু কিছু পণ্যের শুল্ককর প্রত্যাহারের কারণে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হয়নি।

এ বিষয়ে শেওলা কাস্টমসের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা শিমুল সেন বলেন, ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়। আবার ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর রাজস্ব আদায়ও বাড়ে। তবে বেশিরভাগ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যায় না। এবার লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা সহনীয় ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উচ্চ শুল্কে পণ্য আমদানি কমে যাওয়ার কারণে এই অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমরা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারিনি। তবে আমাদের টার্গেট থাকবে অর্থবছরের বাকি ৬ মাসে রাজস্ব আদায়ে ধারা ইতিবাচক হবে।

 

 

এদিকে গত ডিসেম্বরে শেওলা স্থলবন্দরে আমদানি নিয়ে কিছুটা সংকটের সৃষ্টি হয়। ভারত থেকে যে পাথর আমদানি করা হয়, তা সরাসরি মাইন থেকে গাড়িতে লোড হয়ে চলে আসে। ফলে এসব পাথরের সাথে মাটি ও বালি মিশ্রিত থাকে। ইতিপূর্বে তামাবিল ও শেওলায় পাথর শুল্কায়নের পূর্বে বন্দর কর্তৃপক্ষ মাটি ও বালির ওজন বাদ দিয়ে পাথরের ওজন নির্ণয় করতেন এবং সে অনুযায়ী শুল্কায়ন করা হতো। যার ফলে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না।

কিন্তু বর্তমানে স্থলবন্দরের নতুন কর্মকর্তারা মাটি ও বালির ওজন ছাড় দিতে চাচ্ছেন না। ফলে বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে আমদানিকারকদের কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় তামাবিল ও শেওলায় মালবাহী গাড়ি আনলোড করতে দিচ্ছেন না স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

Sharing is caring!