ছবির এই বধ্যভূমিতে অন্যান্যদের সাথে দাফন করা হয় বিয়ানীবাজারের ৩ বীর শহীদকে/
স্টাফ রিপোর্টার:
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসজুড়ে সিলেট ক্যাডেট কলেজের পেছনে পূর্বদিকের টিলার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ছিল। যেখানে মুক্তিকামী বাঙালিদের ধরে নিয়ে পাকহানাদাররা চালাত নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ। এখানে নিহত প্রাথমিকভাবে ৬৬ জন শহীদের নাম-পরিচয় পেয়েছে শহীদ স্মৃতি উদ্যান বাস্তবায়ন কমিটি। এখানে বিয়ানীবাজার উপজেলার তিনজন বীর শহীদের নামও আছে।
সিলেট সেনানিবাসের সহযোগিতায় দুটি শহীদ পরিবারের উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান’ সিলেট।
এদিকে দুই বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন গবেষণাপত্র ও গবেষকদের তথ্যমতে এ বধ্যভূমিতে শহীদ হওয়া ৬৬ জন বীর শহীদের পরিচয় পাওয়া গেছে প্রাথমিকভাবে। গত বছরের মার্চে এটি উদ্বোধন করা হয়। তখন সংবাদ সম্মেলনে এই ৬৬ জনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা। এদের মধ্যে বিয়ানীবাজারের ৩ জন হলেন- উপজেলার দেউল গ্রামের মন্তাজ আলীর ছেলে নুরুল হুদা গউস, ইপিআর ক্যাপ্টেন আলাউদ্দিন ও ছোটদেশ এলাকার আছদ্দর আলীর ছেলে তোতা মিয়া।
সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় সিলেট ক্যাডেট কলেজে ছিল পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প। কলেজের পিছনের পূর্বদিকের টিলায় নারী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিকামী বাঙালিকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ ফেলে দেওয়া হতো টিলার জঙ্গলে। মানুষের মরদেহগুলো হতো পশুপাখির খাদ্য। পড়ে থাকত কঙ্কাল। দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছর পরও এসব এলাকায় মানুষের হাড়, মাথার খুলি পড়ে থাকতে দেখেছেন স্থানীয়রা। সিলেটের সকল বধ্যভূমি চিহ্নিত করে যথাযথ মর্যাদায় সংরক্ষণ করার দাবি জানান তিনি।
শহীদ স্মৃতি উদ্যানের উদ্যোক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বীরপ্রতিক জানান, ‘বধ্যভূমিটি আমাদের কেবল আত্মদানের স্মৃতি নয়। এটি আমাদের গর্বের, আবেগের। এখানে একটি শহীদ স্মৃতি উদ্যান নির্মাণের পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের। সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি’র সহযোগিতায় উদ্যানের কাজ শুরু করা হয়; ইতোমধ্যে কাজ শেষ। তিনি আরও বলেন, গণকবরে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় পেতে সিলেটের স্থানীয় পত্রিকাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ৬৬ জন বীর শহীদের পরিচয় পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে তাঁদের নামফলক বসানো হবে। পরবর্তীতের আর কারও পরিচয় পাওয়া গেলে তাদের নাম ফলকও বসানো হবে।’
Sharing is caring!