স্টাফ রিপোর্টার:
ধুলো ওড়া গ্রামীণ কাঁচা মেঠোপথ। নদীর পাশ দিয়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় অবহেলিত ওই জনপদে। এসব ছবি দেখে বিশ্বাস করা কঠিন বিয়ানীবাজারে এমন গ্রামও আছে কি-না? যদিও সেসব গ্রামে উন্নয়নের বুলি আওড়িয়ে রাজনীতিকরা অন্ধকার করে রেখেছিলেন।
দূর্গম এই এলাকার বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছেন বিয়ানীবাজারের নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তাফা মুন্না। বাশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে, প্রায় দেড় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে তিনি পৌঁছালেন বিরোধপূর্ণ ওই এলাকায়। সেখানে একটি সেতু নির্মিত হবে, কিন্তু দুই গ্রামের মানুষের বিরোধের কারণে সেখানে সেতুটি হচ্ছেনা।
বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ হাজরাপাড়া ও বরইআইল গ্রামবাসীর বিরোধের কারণে একটি জনপদ উন্নয়ন বঞ্চিত-এমন খবর পেয়ে উদ্যোগী হন ইউএনও। সিদ্ধান্ত নেন এলাকায় গিয়ে মানুষের সাথে কথা বলবেন, জানার চেষ্টা করবেন অন্তরালের রহস্য। মঙ্গলবার তাই ওই দু’টি গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন তিনি।
গোলাম মুস্তাফা মুন্না সেখানে পৌঁছে ক্ষেতের জমিতে বসলেন, মানুষের কথা শুনলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন বিরোধ আর থাকবেনা, সেখানকার পালেশ্বরী খালের উপর সেতু নির্মাণ এবং চলাচলের রাস্তা মেরামত ও সংস্কার করা হবে। মাটিতে বসা তার ওই ছবি ভাইরাল হয়েছে, বিয়ানীবাজারবাসীর আলোচনায় স্থান পেয়েছে।
এ বিষয়ে চারখাই ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন মুরাদ চৌধুরী জানান, ইউএনও’র এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। অবহেলিত এই জনপদের দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে পালেশ্বরী খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতিকে সানন্দে গ্রহণ করেছেন এলাকাবাসী। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী কাজী আবুল কাশেম বলেন, মানুষের সাথে মিশে তাদের দাবীর কথা বুঝে কাজ করার মানষিকতা খুব প্রশংসিত হচ্ছে। বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী দিপক রঞ্জন দাস বলেন, দীর্ঘদিন থেকে দুই গ্রামবাসীর টানাপোড়েনের কারণে উদ্যোগ নেয়া স্বত্ত্বেও সেতু নিমাণের অগ্রগতি হচ্ছিলনা। বিষয়টি ইউএনও সাহেবকে জানানোর পর তিনি সরজমিন গিয়ে তা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন। ওই এলাকায় গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা যায়না। তাই স্যার অনেকটা পথ হেঁটে সেখানে পৌঁছান।
বিয়ানীবাজারের উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানান, প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ হেঁটে গিয়েছি। সরজমিন ঘটনাস্থলে যাওয়ায় অনেক বিষয় সহজ হয়ে গেছে। আশাকরি এখন সেতু নির্মাণ করা যাবে।
Sharing is caring!