ছবিতে কিচেন মার্কেটের ২য় তলায় এক সবজি ব্যবসায়ী বলছেন দু:খকথা
* সৌন্দর্য্য আর আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ভবনটি নির্মাণ করা হয়
* অব্যবহৃত পড়ে আছে দুই তলা
* ১৫ বছরেও শেষ হয়নি পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ কাজ
স্টাফ রিপোর্টার:
পৌরশহরের কিচেন মার্কেট বিয়ানীবাজারবাসীর দু:খ গোছাতে পারছেনা। নানা আলোচনা-বিতর্কের পরও এই মার্কেটটি প্রাণ ফিরে পাচ্ছেনা। ১৫ বছরেও চারতলা এই ভবনটির নির্মাণ কাজে যেমন শেষ হয়নি, তেমনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দূর্ভোগও লাঘব হয়নি। উপরন্তু মার্কেটের পরিচর্যায় পৌর কর্তৃপক্ষকে বাড়তি খরচ যোগাতে হচ্ছে।
উদ্দেশ্য ছিল, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত ভবনটি ভাড়া দিয়ে রাজস্ব সংগ্রহ করবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে উদ্যোগ আশার আলো দেখেনি।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কিচেন মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু হয় গত ২০০৯ সালে। তৎকালীন পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেনের উদ্যোগে মার্কেটটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজের শুরু থেকে আজোবধি এই মার্কেট নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছেনা। এরপর ১ম মেয়াদে আব্দুস শুকুর, ২য় মেয়াদের আংশিক ফারুকুল হক মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করলেও মার্কেটটি জমজমাট করতে পারেননি। মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ড, নীচতলা, দু'তলাসহ উপরে আরেকতলার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এর আন্ডারগ্রাউন্ডে গাড়ি পার্কিং, ১ম তলায় ছোট-ছোট খুপড়ি ঘর, ২য় তলায় মাছ-তরকারির দোকান-শেড, ৩য় তলায় অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ৪র্থ তলায় বিশ্রামাগার নির্মাণের নকঁশা ছিল। কিন্তু সে অবস্থা থেকে সরে এসেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এখন আন্ডারগ্রাউন্ডে মাছের বাজার, ১ম তলায় মনোহারী দোকান, ২য় তলায় সবজি ব্যবসায়ীদের গোদাম এবং এর উপরে মাদক-গাঁজাসেবীদের আড্ডা। মার্কেটের সিঁড়ির রেলিংয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। পুরো মার্কেটের সৌন্দর্য্য ফেরাতে এখনো প্রায় কোটি টাকা খরচ করতে হবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
জানা যায়, মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিস প্রজেক্টের (এমজিএসপি) আওতায় চারতলাবিশিষ্ট ভবনটির শুরুতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। পরে তা একাধিকবার বর্ধিত করা হয়। মার্কেটের দোকানকোটা বেদখল, ব্যবসায়ীদের অনিহা, কর্তৃপক্ষের সাথে মতানৈক্য, অবকাঠামোগত সমস্যা ও বাজার স্থাপন অনুপযোগীসহ নানা কারণে মার্কেটটিতেবহু বছর ধরে চলছিল অচলাবস্থা। এখন সেই অবস্থা কাটলেও মার্কেটটি অনেকটা ভুতুড়ে পরিবেশে ফিরে গেছে।
খোঁজ নিয়ে আরোও জানা যায়, পৌরসভার কিচেন মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে নির্মিত মাছ বিক্রির টেবিল (শেড) গুলো কিনে নিয়েছে মৎস্যজীবি সংগঠন। তারা পৌর কর্তৃপক্ষকে টাকাও বুঝিয়ে দিয়েছে। দু'তলায় সবজি ব্যবসায়ীদের বসতে অনীহা। কারণ শহরের মেইন রোডের পাশে দোকান ভাড়া নিয়ে একাধিক ব্যবসায়ী সবজি বিক্রি করেন। তাই ক্রেতারা সিঁড়ি বেয়ে ওপরে না ওঠে নীচ থেকে সবজি ক্রয় করেন। এমন অবস্থায় দু'তলার সবজি বিক্রেতারা ক্ষতির শিকার হন। পৌর শহরের ব্যবসায়ী আলী আহমদ কুনু জানান, মেইন রোডের ব্যবসায়ীদের কারণে ক্ষুদ্র এবং কিচেন মার্কেটের সবজি বিক্রেতারা বেশ ক্ষতির সম্মুখিন বলে তিনি শুনেছেন।
সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজার পৌরশহরের ফুটপাত থেকে প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। মূলত: তাদের ইন্ধনে সবজি বিক্রেতারা কিচেন মার্কেটে ওঠতে অনাগ্রহী। আর ক্ষুদ্র ও ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের কারণে পৌরশহরের ফুটপাত দখলমুক্ত হচ্ছেনা। তাই অনেকটা ক্ষোভের স্বরে বিয়ানীবাজার দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান শাহরিয়ার বলেন, কিচেন মার্কেট পৌরবাসীর কী কাজে লাগছে? এই মার্কেট নির্মাণের অন্তরালের গল্প খুঁজতে গেলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, মার্কেটের সৌন্দর্য্য বর্ধণ করে দ্রুত তা ব্যবহার উপযোগী করা উচিত।
বিয়ানীবাজার পৌরসভার প্রশাসক ও ইউএনও গোলাম মস্তুফা মুন্না বলেন, ‘নতুন আসায় পুরো বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধানে উদ্যেোগ নেয়া হবে।’
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com