প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বিয়ানীবাজারে খোয়া যাওয়া ফোন উদ্ধারে পুলিশী তৎপরতা হতাশাজনক

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১২, ২০২৪, ০২:০৩ অপরাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে খোয়া যাওয়া ফোন উদ্ধারে পুলিশী তৎপরতা হতাশাজনক

 

 

স্টাফ রিপোর্টার:

বিয়ানীবাজারের একটি প্রতিষ্টানে বেসরকারি চাকরী করেন ইমন আহমদ (২৬)। গত ৬ অক্টোবর সকালে তার নিজের ব্যবহৃত একটি আইফোন ১৫ প্রো ধরনের একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় ইমন আহমদ বাদি হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় সাধারণ ডায়রী (নং ৪৫, তাং ১-১১-২০২৪ইং) করেন। ওই ঘটনার কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ইমন জানান, প্রায় দেড় লাখ টাকা দাম মোবাইল ফোনটির। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো- মোবাইলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে। এ কারণেই মোবাইলটি উদ্ধারের জন্য ব্যাকুল তিনি।

 

আধুনিক জীবনে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব রয়েছে। যোগাযোগের অন্যতম প্রধান উপকরণ ছাড়াও অনেকেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই বহুমাত্রিক কাজ করে থাকেন। ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশ, গুরুত্বপূর্ণ নথি সংরক্ষণ, ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্তও সংরক্ষণ করা হয় মোবাইল ফোনে। অনেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যও করে থাকেন। তবে মোবাইল ফোন খোয়া যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ তা উদ্ধারে আগ্রহ দেখায় না। বড় বড় ঘটনায় ব্যস্ততা দেখিয়ে মোবাইল ফোন খোয়া যাওয়ার বিষয়টি পাত্তাই দেওয়া হয় না।

মাটিকাটা গ্রামের প্রবাসী আবুল হোসেন (৪৩) মোবাইল ফোন হারিয়েছে মর্মে বিয়ানীবাজার থানায় আরেকটি সাধারণ ডায়রী (নং ১৪৮৩, তাং ৩০-০৯-২০২৪ই) করেন। কিন্তু প্রায় দেড় মাম পরও তার মোবাইল ফোন আর পাওয়া যায়নি।

 

থানা পুলিশ সূত্র জানায়, প্রতিমাসে বিয়ানীবাজারে মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত সাধারণ ডায়রী হয় গড়ে ২০টি। সে তুলনায় মোবাইল ফোন উদ্ধারের হার অত্যন্ত কম। একটি ক্ষুদ্র অংশই তাদের খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন ফিরে পান। বিয়ানীবাজার থানা পুলিশও বিগত দিনে বেশ কিছু মোবাইল ফোন উদ্ধার সংশিষ্ট মালিকদের কাছে হস্তান্তর করেছে।

 

জানা যায়, বিয়ানীবাজারে মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই চুরি অথবা অসাবধাণতাবশত: খোয়া যাওয়ার ঘটনা। এ বিষয়ে থানায় গেলে পুলিশও মামলা না নিয়ে হারানোর জিডি করতে পরামর্শ দিয়ে থাকে। এছাড়া অনেকেই মোবাইল ফোন খোয়া যাওয়ার পর জিডিও করতে চান না। মামলার ক্ষেত্রে খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধার, আদালতে অভিযোগপত্র বা চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকে। কিন্তু জিডির ঘটনায় এরকম কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকায় মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় না।

 

চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনগুলো আগে মোবাইল ফোনের দোকানে বিক্রি করা হতো। সেই দোকান থেকে সেগুলো আবার সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করা হতো। কিন্তু প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ সেসব মোবাইল ফোনের অবস্থান ও ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করে উদ্ধার করতো। এখন দামি ফোনগুলোর পার্টস খুলে বিক্রি করা হয়। এজন্য চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার কম হচ্ছে।

 

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘‘একটি চুরি-ছিনতাই বা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার আর একটি খুনের মামলা ডিটেকশন করতে প্রায় একই সময় লাগে। বড় অপরাধের রহস্য সমাধানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর চাপ থাকে। হারিয়ে যাওয়া ফোন জড়িত মামলাগুলো প্রায়ই কম অগ্রাধিকার পায়। তবে মোবাইল ফোন হারানোর জিডি বা মামলা যদি হয়- আর যদি সেটি খোলা থাকে, তাহলে অবশ্যই তা উদ্ধার করা যাবে। এক্ষেত্রে সময় একটু বেশী লাগে।”

Sharing is caring!