প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৭শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৭শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

বিয়ানীবাজারে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেননা দরিদ্ররা

editor
প্রকাশিত মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেননা দরিদ্ররা

 

স্টাফ রিপোর্টার:

বিয়ানীবাজারে কাংখিত সুফল মিলছে না কম আয়ের মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়া বিগত সরকারের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প। কোথাও-কোথাও জ্বলছে না আলো। কোথাও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিত্তশালীদের ঘরে লেগেছে এ সোলার প্যানেল। ঘরে-ঘরে লাগানো সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প দেখভালের কথা থাকলেও উধাও হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান।

বিগত সরকারের রাজনৈতিক এ প্রকল্প নিয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের আচরণও দায়সারা। উপজলায় মোট কতটি প্যানেল স্থাপন হয়েছে কিংবা কতটি বিকল হয়েছে, সে তথ্যও নেই তাদের কাছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাতাকুঁড়ি বলছে, তাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী উপজেলাগুলোতে সরকারি ও সংসদ-সদস্যের বিশেষ বরাদ্দ টিআর ও কাবিখার ৫০শতাংশ দিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে অসচ্ছল মানুষের ঘরে সৌর বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়। সে বছর থেকেই সোলার প্যানেল স্থাপনের কাজ শুরু করে মন্ত্রণালয় নির্ধারিত পাতাকুঁড়িসহ আরও কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প চলমান থাকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত। বিয়ানীবাজারে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পাতাকুঁিড় ঠিকাদারী প্রতিষ্টান।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিয়ানীবাজার উপজেলায় প্রায় ১১ হাজার হোম সিস্টেম সোলার প্যানেল লাগানো হয়। স্থাপনের পরবর্তী ৩ বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দেখভালের কথা থাকলেও অনেকেই পাননি সেই সেবা। এর মধ্যে কিছু নষ্ট হয়েছে প্রথম বছরেই। আবার কিছু নিজেরাই ব্যাটারি পরিবর্তন করে চালানোর চেষ্টা করছেন। পৌরশহরের কসবা গ্রামের নুরুল ইসলাম নামের একজন জানান, তাদের ঘরে সরকারি সোলার স্থাপনের এক মাস পর থেকে একটি বাতিও জ্বলছে না। পাতাকুঁড়ি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। একই অভিযোগ প্রতিবেশী নজমুল ইসলামের। এখলাছ মিয়া নামের অপর আরেকজন জানান, খুব বেশি তাপ হলে মিটমিট করে বাতি জ্বলে।

প্রায় পুরো উপজেলার চিত্র একইরকম। সোলার প্যানেলগুলোর বেশির ভাগই কয়েক মাস ঝিরঝির করে বাতি জ্বললেও অনেক বাড়িতেই এখন আলো জ্বলছে না। নষ্ট হয়ে গেছে সোলার প্যানেল বোর্ড, ব্যাটারি ও বাতি। এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়েও জনসাধারণের মাঝে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়। নিম্নমানের মালামালের কারণেই সোলার প্যানেলগুলো অল্পদিনে বিকল হয়ে পড়ে। গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা-সোলার) কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের চাহিদামত সোলার প্যানেল বরাদ্দ দেয়া হতো। তবে এসব প্যানেল বিতরণে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। সচ্ছল ও যাদের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে এমন ব্যক্তির নামেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বরাদ্দের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের। বঞ্চিত হয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিরণ মাহমুদ বলেন, সংসদ-সদস্যের তালিকা অনুযায়ী বরাদ্দ সৌর বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখানে আমাদের কাটছাঁট করার কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে এ প্রকল্প বন্ধ থাকায় তাদের কিছু করার নেই।

Sharing is caring!