স্টাফ রিপোর্টার:
অভ্যাসটা হয়েছিল করোনার সময়। ঘরবন্দী মানুষ অনলাইনে কাজকর্মে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। সেই অভ্যাস যায়নি। বরং আরও পাকা হয়ে বসেছে। এখন অনেকে ঈদের কেনাকাটাও অনলাইনে সারেন। দোকানে দোকানে ঘুরে গলদঘর্ম হওয়ার চেয়ে ঘরে বসে আরামে অনলাইন কাপড়চোপড় ও নিত্যপণ্য কেনেন। বিয়ানীবাজারে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও অনলাইন কেনাকাটায় এগিয়ে এসেছেন। উপজেলার কয়েক শ'-ত পুরুষের পাশাপাশি অন্তত: শতাধিক নারী অনলাইন পণ্য বিক্রিতে সরব রয়েছেন।
বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রী মাসুদা বেগম। পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার দুই দিন পরই তিনি অনলাইনে একটি থ্রি-পিস কিনেছেন। এবার ঈদের সব কেনাকাটা অনলাইনেই সেরে নেবেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে ঘরে বসে তাঁর বন্ধুবান্ধবও এবার ঈদের কেনাকাটা করছেন।
অনলাইনে পাইকারি দামে পণ্য এনে বিক্রি করেন বিয়ানীবাজার পৌরশহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেটের তরুণ আব্দুল করিম। তিনি জানান, মানুষজন এখন ধীরে ধীরে অনলাইননির্ভর হয়ে পড়ছেন। তাই অনলাইনে সব ধরনের পণ্যের ব্যবসাও দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অনলাইনে নিয়মিত পণ্য ক্রয় করা তরুণ শাওন আহমদ বলেন, ‘মাঝে ই-কমার্স নিয়ে মানুষের মনে এক ধরনের বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার তারা অনলাইনে কেনাকাটা করছেন। বিশেষ করে ক্যাশ অন-ডেলিভারি হওয়ার কারণে মানুষের আস্থা বেড়েছে।’
অনেকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, একটা সময় ছিল যখন কোনো পণ্য কিনতে সরাসরি মার্কেট বা শপিংমলে যাওয়ার বিকল্প ছিল না। দোকানে গিয়ে দশ রকম পণ্য যাচাই-বাছাই করে কেনাকাটা করতেন ক্রেতারা। কিন্তু সময় বদলেছে। বেড়েছে ব্যস্ততাও। ফলে অনেকের পক্ষেই এখন কয়েক ঘণ্টা সময় নিয়ে মার্কেট বা শপিংমলে যাওয়ার সুযোগ হয় না। এরকম মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তারা ঈদ কিংবা যে কোনো উৎসব ঘিরে ঝুঁকছেন অনলাইনে কেনাকাটায়।
মূলত করোনার পর থেকে অনলাইনকেন্দ্রিক বাণিজ্যের একটা নতুন ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়েছে। যেহেতু ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে, তাই দিন দিন উদ্যোক্তার সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে। কাপড়, জুতা, প্রসাধন, ইলেকট্রনিকসামগ্রী, ইমিটেশনের গয়না, ওষুধ, ফল, মাছ, চাল, ডাল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবই এখন অনলাইনে পাওয়া যায়। অনেকে এখন ঝক্কিঝামেলা এড়াতে অনলাইনেই কেনাকাটা সারছেন। এবারের ঈদেও অনলাইনকেন্দ্রিক ব্যবসা এরই মধ্যে জমজমাট রূপ নিয়েছে। ফলে বিপণিবিতানগুলোর মতো অনলাইনেও এখন জমে উঠেছে ঈদবাজার।
বিয়ানীবাজার থেকে পরিচালিত অনেক ফেসবুক পেইজ ঘেঁটে দেখা গেছে, অনলাইনে স্থানীয়ভাবে প্রায় সব ধরনের সামগ্রীরই বেচাকেনা চলছে। অনেক উদ্যোক্তা ফেসবুকে নিজেদের পেজে কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্যের ছবি ও দাম আপলোড করে দিচ্ছেন। আগ্রহীরা সেসব পেজে গিয়ে পছন্দের সামগ্রী কিনতে দরদাম করছেন। অনেক উদ্যোক্তা আবার ফেসবুক পেজে মূল্যছাড়ও দিচ্ছেন। কেউ কেউ কেনাকাটা করার পর সংশ্লিষ্ট পেজগুলোয় গিয়ে সেবা এবং পণ্য নিয়ে ইতিবাচক রিভিউ দিচ্ছেন।
বিয়ানীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক হাসান শাহরিয়ার বলেন, বিপণিবিতানগুলোর মতো অনলাইনেও এখন ঈদের ব্যবসা জমে উঠেছে। অনলাইন বাজারের মূল ক্রেতাই হচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। তাই তাঁদের আগ্রহের জিনিসপত্রই অনলাইনে বেশি বিক্রি হয়। তিনি বলেন, অনলাইনে কেনাকাটা এখন বেশ জনপ্রিয়। ফেসবুকে এমন কিছু পেজ আছে, লাইভ চলাকালেই তাদের পণ্য বিক্রি হয়ে যায়। তারা ক্রেতাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে। তা ছাড়া অনলাইনে ভিন্ন রকম নকশার কাপড়চোপড় পাওয়া যায়। আবার দামও সহনীয় থাকে।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com