স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট মহানগরের সাগরদিঘীরপাড়ে মৎস্য ভবন-সংলগ্ন গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ‘সরকারি জায়গা’ দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বা এ বিষয়ে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন সাবেক জাতীয় পার্টি নেতা নজরুল ইসলাম বাবুল। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বিষয়টি জানান।
সোমবার বেলা আড়াইটায় সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে মিষ্টিজাত দ্রব্য প্রস্তুত, বিক্রয় ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ‘ফিজা এন্ড কোং’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবুল জানান- আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির লোকজন দখল করে রেখেছিলেন। তবে তারা একটি সাইনবোর্ড স্থাপন ব্যতিত এ জায়গায় কোনো অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেনি। যার কারণে এলাকাবাসীও প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেনি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর স্থানীয় একটি চক্র দখল করে নেয় এবং একতলা একটি বাসায় নানা অপকর্ম চালাতে থাকে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার জুমআর নামাজ শেষে মসজিদ থেকে শতাধিক মুসল্লি ওই স্থানে গিয়ে ওই ঘর থেকে অপকর্মকারীদের বিতাড়িত করেন। বর্তমানে জায়গাটিতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ স্থানে আমরা এলাকাবাসী স্থায়ী অথবা অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।
বাবুল আরও বলেন- এদিকে ঘটনার পর বিভিন্ন মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি, আমাকে জড়িয়ে নানা কথা বলা হচ্ছে। আমি নাকি জায়গাটি দখর করতে মানুষ পাঠিয়েছি। কিন্তু এ বিষয়ে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি স্থানীয় সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি হিসেবে জায়গাটি দখলমুক্ত হোক এবং অপরাধীরা বিতাড়িত হোক এটাই চেয়েছি। এখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো উদ্দেশ্য নেই।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একটি রাজনৈতিক দলের নামে নেতাকর্মীরা সাগরদীঘিরপাড় এলাকায় মৎস্য অধিদপ্তরের জায়গা দখল করে ‘ড্রিম সিটি’ নামে একটি বসতঘর তৈরি করে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার জুমার নামাজ পরবর্তী সময়ে স্থানীয়রা সেই স্থানে গেলে সেখানে থাকা কিছু যুবক ও নারী স্থানীয়দের ধাওয়া দেন। এসময় স্থানীয়রা তাদের উপর ‘ককটেল’ ও গুলি ‘ছুড়া’ হয়েছে এমন অভিযোগ করলে সাগরদিঘীরপাড় এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে পালটা ধাওয়া দেন। এসময় জায়গার দখলে থাকা অবস্থানকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষকালে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পুড়ানো হয়েছে ৪টি মোটরসাইকেল।
পরে পুলিশ গিয়ে সংঘর্ষ থামায় ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি তাজা ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে, কয়েক দিন আগে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা আদালতের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে অপহরণের পরে সেই স্থানে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া একই সময়ে এ স্থানেই গণধর্ষণ করা হয় এক নারীকে। এ ঘটনায় পরে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Sharing is caring!