প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে ৯ বছরে টিলা চাপায় ঝরলো ৫১ তাজা প্রাণ

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ১, ২০২৫, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ৯ বছরে টিলা চাপায় ঝরলো ৫১ তাজা প্রাণ

সিলেট অফিস:
বর্ষার মৌসুম আসলেই সিলেটে বাড়ে টিলা ধসের ঘটনা। এতে সম্পদের ক্ষতির পাশাপাশি ঘটে ব্যাপক প্রাণহানি। অনেক সময় ঘুমন্ত অবস্থায় টিলা ধসে শিশুসহ নিহত হচ্ছেন পুরো পরিবারের সবাই। বিদায়ী বছরের ১০ জুন সকালে সিলেট মহানগরের চামেলীবাগ এলাকায় টিলা ধসে চাপা পড়ে একই পরিবারের বাবা-মা ও সন্তানের মৃত্যুর ঘটনা আলোচিত হয় পুরো সিলেটে। এর পরপরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোড়ালোভাবে ঘোষনা দেওয়া হয়- টিলা নিচে বসবাসরত ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের দ্রুত সরানো হবে।

কিন্তু ঘোষনাতেই শেষ হয় সকল কার্যক্রম! এভাবে ঘটতে থাকে একের পর এক টিলাধসে মৃত্যু। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর তথ্য বলছে, ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে সিলেটে টিলা ধসে ৫১ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

সম্প্রতি এক অনুস্ঠানে বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার জানান, এসএ রেকর্ড অনুযায়ী সিলেটে ২০০৯ সালে টিলার সংখ্যা ছিল ১০২৫ আর বর্তমানে এ সংখ্যা মাত্র ৫৬৫ টিতে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করলেই অনুধাবন করা যায় কত খানি আইনের সফল বা কঠোর প্রয়োগ হচ্ছে। টিলা মূলত ধ্বংস হয় সরকারি উদ্যোগ, ব্যক্তি উদ্যোগ, শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, আইন প্রয়োগের অভাবে। টিলাকে পাথর কোয়ারী হিসেবেই ইজারা প্রদান করা হচ্ছে সরকারিভাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট সদর উপজেলার আখালিয়া, ব্রাহ্মণশাসন, দুসকি, টিলারগাঁও, খাদিমনগর, খাদিমপাড়া, বালুচর, পাঠানটুলা গুয়াবাড়ি জাহাঙ্গীরনগর, আখালিয়া বড়গুল এলাকার মুক্তিযোদ্ধা টিলাসহ পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ঘর বানিয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করছে অসংখ্য পরিবার। কেউ ঘর ভাড়া নিয়েছে, কেউ নামমাত্র টাকা দিয়ে দখলদারদের কাছ থেকে জায়গা কিনেছে। বসবাসকারীদের মধ্যে নিম্ন আয়ের লোকজনই বেশি। সব মিলিয়ে সিলেট জেলায় প্রায় ১২ হাজার লোকের বসবাস বিভিন্ন টিলার পাদদেশে।

এদিকে ধসের ঘটনাগুলোর জন্য টিলা-পাহাড় কর্তনকেই মূলতঃ দায়ী করছেন পরিবেশদিরা। কিন্তু সিলেটে কিছুতেই বন্ধ হয় না টিলা ও পাহাড়ের মাটি কাটা।

অভিযোগ রয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা এসব মানুষকে সরিয়ে নিতে প্রশাসনের কার্যতঃ কোনো পদক্ষেপ নেই। শুধু প্রাণহানি ঘটলে কিছুটা টনক নড়ে প্রশাসনের। মাঝে-মধ্যে অভিযান দিলে টিলার নিচের মানুষ কয়েক দিনের জন্য অন্যত্র যায়। কিন্তু অভিযানের পরই ফের তারা ফিরে আসেন।

তবে প্রশাসন বলছে, বারবার সতর্ক করার পরও টিলার নিচে ঘর বানানো মানুষজন অন্যত্র যান না। তাদের সরাতে প্রতি বছরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় নানা পদক্ষেপ।

Sharing is caring!