প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেট-ঢাকা রুটে টিকেটের মূল্য চড়া, বিপাকে বিমানযাত্রীরা

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ
সিলেট-ঢাকা রুটে টিকেটের মূল্য চড়া, বিপাকে বিমানযাত্রীরা

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট-ঢাকা-সিলেট রুটে বিমানের টিকেটের মূল্য এখন আকাশচুম্বী। পর্যটক বেড়ে যাওয়া ও ভাঙ্গাচোরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের কারণে আভ্যন্তরীণ রুটের টিকেটের মূল্য হঠাৎ বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

এ রুটে বর্তমানে জাতীয় পতাকাবাহী বাংলাদেশ বিমান ছাড়াও বেসরকারি বিমান অপারেটর ইউ-এস বাংলা ও নভোএয়ারের ফ্লাইট অপারেট হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিলেটে বিপিএল (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ), এনসিএল (ন্যাশনাল ক্রিকেট লীগ), ওকাস-এর কনফারেন্স হয়েছে। ডিসেম্বর মাসে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে। শীত পড়ায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসীও দেশে আসছেন। শীত পড়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকের আগমনও বেড়েছে। সবমিলিয়ে এ রুটে হঠাৎ করে টিকেটের লোড বেড়েছে।

সিলেট-ঢাকা রুটে আজ সোমবারের ইউএস বাংলা ও নভোএয়ারের ৬টি ফ্লাইটের মূল্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুটি অপারেটরের ফ্লাইটে টিকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৭ হাজার টাকা আর সর্বোচ্চ মূল্য ১১ হাজার ৫শ’ টাকা। সকাল ৮টা ও রাত ৮টার ইউএস বাংলার ফ্লাইটের টিকেট মূল্য হচ্ছে ১১ হাজার টাকা করে। একই অপারেটরের বিকাল সাড়ে ৫টার টিকেটের মূল্য হচ্ছে ৯ হাজার টাকা। আর নভোএয়ারের টিকেটের মূল্য হচ্ছে-৭ হাজার থেকে ৯ হাজারের মধ্যে। একইদিনে ঢাকা-সিলেট রুটে এ দুটি অপারেটরের টিকেট মূল্য হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৫শ’ টাকা। এ রুটে ইউ-এস বাংলার ৪টি ফ্লাইটের টিকেট মূল্য হচ্ছে-সকাল সাড়ে ৮টা ও রাত ৮টা ৫০ মিনিটের টিকেট মূল্য ১১ হাজার ৫শ’ টাকা, বেলা ১টা ৫০ এবং বিকেল সাড়ে ৫টার টিকেটের মূল্য হচ্ছে-৯ হাজার টাকা। নভোএয়ারের সকাল সাড়ে ৮টার টিকেট মূল্য ৯ হাজার টাকা, বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটের টিকেট মূল্য ৮ হাজার টাকা আর রাত ৯টা ৫৫ মিনিটের টিকেট মূল্য হচ্ছে ৭ হাজার টাকা। এদিন বিমান বাংলাদেশ-এর বিমানের সর্বোচ্চ টিকেট মূল্য দেখাচ্ছে ৫ হাজার ৯৯৯ টাকা এবং পরদিন মঙ্গলবারের টিকেট মূল্য দেখাচ্ছে-৯ হাজার ৯৯৯ টাকা।

সিলেটের বাসিন্দা, আমেরিকা প্রবাসী জয়িতা জানান, গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকা-সিলেট রুটে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটের একটি টিকেট কিনেন ১১ হাজার ৫শ’ টাকায়।

সিলেট সফররত ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশী’জ-এর ডাইরেক্টর (মিডিয়া) কে এম আবু তাহের চৌধুরী জানান, সিলেট-ঢাকা-সিলেট রুটে বিমান ভাড়া বৃদ্ধিতে তারা উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, সিলেট থেকে ঢাকার বিমান টিকেটের যে মূল্য, এই মূল্য নিয়ে লন্ডন থেকে প্যারিসের রিটার্ন টিকেট কেনা যায়। তিনি এ রুটের বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানান। পাশাপাশি সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের দাবি জানান।

সিনিয়র সাংবাদিক হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী জানান, গত শনিবার তিনি তার কন্যাকে নিয়ে একটি জরুরী কাজে ঢাকায় যেতে বিমান টিকেট খুঁজছিলেন। কিন্তু, টিকেটের উচ্চমূল্যের কারণে তিনি সড়কপথে ঢাকায় যান।

বিমান ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে ইউএস-বাংলা নভোএয়ারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউএস বাংলার জনৈক কর্মকর্তা জানান, আগে এ রুটে ইউএস বাংলার ৫টি ফ্লাইট অপারেট হতো। বর্তমানে অপারেট হচ্ছে ৪টি ফ্লাইট। সিলেটে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ইভেন্ট হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল কলেজ বন্ধ থাকা, প্রবাসী ফ্লো(প্রবাহ), শীত মৌসুম, সড়কপথে বেশী সময়ক্ষেপণ-এসব কারণে আকাশ পথে যাত্রীর চাহিদা বেড়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, বেশীরভাগ ফ্লাইটের টিকেটই সাড়ে ৫ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি হয়। একটি ফ্লাইটের ১০/১২টি টিকেট বেশী মূল্যে বিক্রি হয় বলে স্বীকার করেন তিনি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে সিলেট-ঢাকা-সিলেট রুটে টিকেটের ক্ষেত্রে স্পেশাল ডিসকাউন্ট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। শুধুমাত্র বোয়িং ৭৭৭/৭৮৮/৭৩৭ এর ক্ষেত্রে উভয় পথে সীমিত সময়ের জন্য এ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। প্যাকেজের আওতায় একমুখী ইকোনমি টিকেটের মূল্য ধরা হয়েছে ট্যাক্সসহ ২৯৯৯ টাকা। তবে, এ প্যাকেজের টিকেট সব সময় মেলে না। এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন কর্মকর্তা জানান, মূলত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের যাত্রীদের সাথে বোয়িংয়ে করে আভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী পরিবহন করা হয়।

সচরাচর এ রুটে ড্যাশ-৮ বিমানে করে যাত্রী পরিবহন করা হয়। যে কারণে অনেকক্ষেত্রে প্যাকেজ মূল্যের টিকেটের সংকট দেখা দেয়।

এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ(আটাব)-সিলেট অঞ্চলের একজন দায়িত্বশীল জানান, ডোমেস্টিক রুটে বাংলাদেশ বিমানের টিকেটের মূল্য তুলনামূলক কম থাকলেও ইউএস বাংলা ও নভোএয়ারের টিকেট মূল্য একটু বেশী। বিষয়টি তারা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের নজরে আনবেন বলে জানান ওই দায়িত্বশীল।

Sharing is caring!