স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের বিমানবন্দর থানা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ৩০টি পাথর মিল উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে এ অভিযান শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা শেষ হয়। পরে বেলা ১টার দিকে সাহেবের বাজারের ভেতর অংশে সরকার তোহা বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ অভিযান চলে বিকাল ৩টা পর্যন্ত।অভিযানে তোহা বাজারের সব কয়টি অবৈধ অস্থায়ী কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিলেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহানগর রাজস্ব সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিদর্শক মামুনুর রশীদ, সিলেট মহানগর পুলিশ, ব্যাটালিয়ান আনসার বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগণ, উত্তরগাছ ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা যায়, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাইপাস মহাসড়কের আশেপাশে ধুপাগুল এলাকা থেকে সালুটিকর সেতুর সদর অংশ পর্যন্ত কয়েক’শ পাথর মিল গড়ে উঠেছে।
পরিবেশে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে, পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়। মামলার রায়ে এ এলাকায় পাথর মিল বন্ধ রাখতে হাইকোর্ট আদেশ দেন। এরপর প্রশাসন অভিযানে নামে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ সুরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অবৈধ লাইসেন্সবিহীন স্টোন ক্রাশিং মেশিন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ৩০টি স্টোন ক্রাশিং মেশিন উচ্ছেদ করা হয় এবং অবশিষ্ট স্টোন ক্রাশিং মেশিন নির্ধারিত সময়ের ভেতর অপসারণের জন্য সময়সীমা দেওয়া হয়। ধোপাগুল এলাকায় স্থাপিত স্টোন ক্রাশিং মেশিনের কারণে উক্ত এলাকার পরিবেশে বিপর্যয় নেমে এসেছে এবং জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাছাড়া পাশেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। এই এলাকায় স্থাপিত অধিকাংশ স্টোন ক্রাশিং মেশিনের কোনো লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই।
স্টোন ক্রাশিং মেশিন স্থাপন নীতিমালা, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) অনুসরণ না করেই অবৈধভাবে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
সিলেট জেলার অবৈধ স্টোন ক্রাশার মেশিন অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘এ উচ্ছেদ অভিযানটি জেলা প্রশাসনের নির্দেশে করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ধোপাগুলে অবৈধ পাথর মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ধোপাগুল থেকে সালুটিকর সদর অংশ পর্যন্ত স্থাপিত অধিকাংশ স্টোন ক্রাশার মেশিনের কোন লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। স্টোন ক্রাশার মেশিন স্থাপন নীতিমালা, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩) অনুসরণ না করেই অবৈধভাবে এসব স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বাকি পাথর মিলগুলো সড়িয়ে না দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Sharing is caring!