
স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারে শিশুটির জন্মের পর প্রয়োজন দেখা দেয় এনআইসিইউ বা নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, সেখানে সিট খালি নেই। এ অবস্থায় মামুন আহমদ নামে এক যুবক সিট পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে শিশুর স্বজনদের সঙ্গে ১৫ হাজার টাকায় চুক্তি করেন। কিছু টাকা অগ্রিম নেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও সিট দিতে পারেননি তিনি মামুন। একপর্যায়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যায় নবজাতক।
রোববার রাতে ওসমানী হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে পুরো এলাকায় তোলপাড় চলছে। নবজাতকের মৃত্যুর পর দালালের খপ্পরে পড়ার বিষয়টি জানতে পেরে রোগীর স্বজনসহ হাসপাতালের দর্শনার্থীরা যুবক মামুনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
মামুন আহমদ সিলেট সদর উপজেলার শিবের বাজারের মেগারগাও গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দালাল চক্রের সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আজ সোমবার মামুনকে পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল হক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার পুরানগাঁও গ্রামের নাম আবুল কাশেম তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তারকে নিয়ে গত শনিবার ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হন। গত রোববার বিকেলে তাহমিনা আক্তার সিজারের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন।
নবজাতকের পিতা আবুল কাশেম জানান, এনআইসিইউর প্রয়োজন পড়লে হাসপাতাল থেকে সিট নেই বলে জানানো হয়। তখন মামুন নামের এক যুবক হাসপাতালের কর্মচারি দাবি করে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসে। সে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সিট দেওয়ার কথা জানায়। কিন্তু দিতে পারেননি। কিছু টাকাও নেন। এ অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তার সন্তান মারা যায়। আগেও তাদের দুটি সন্তান সিজারে জন্ম হলেও তারা মারা গিয়েছে বলে জানান তাহমিনা দম্পতি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার একইভাবে দালালের খপ্পরে পড়ে মারা যায় বিয়ানীবাজারের আলীনগরের ফরহাদ হোসেনের নবজাতক ছেলে।
হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই পলাশ জানিয়েছেন নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় মামুন আহমদকে লোকজন হাসপাতালে মারধর করে। তাকে উদ্ধার করে রাতে ফাঁড়িতে আটকে রাখা হয়। পরে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘটনাটি তিনি অবগত নয় উল্লেখ করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী সমকালকে জানিয়েছেন বিষয়টি খবর নিয়ে খতিয়ে দেখবেন।
Sharing is caring!