স্টাফ রিপোর্টার:
বিয়ানীবাজারের সাবেক সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুশফিকুন নুরের কাছে ভূমি অফিসের নানা অনিয়ম নিয়ে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মো. জয়নুল ইসলাম। তথ্য অধিকার আইনে জমা দেয়া আবেদনটি আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তথ্য না পেয়ে আপীল করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকেও এ সংক্রান্ত কোন তথ্য দেয়া হয়নি।
দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি সামিয়ান হাসান ড. জিসি দেব’র বাড়ির বিষয়ে তথ্য প্রাপ্তির আবেদন করেন। তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের পরও তাকে কোন তথ্য সরবরাহ করা হয়নি।
তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহার ও প্রয়োগ নিয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা পর্যায়ের সক্রিয় ১০ জন সাংবাদিকের অভিজ্ঞতা নিয়েছে আগামী প্রজন্ম। এর মধ্যে সিংহভাগেরই এ আইন প্রয়োগের অভিজ্ঞতা নেই। তারা কখনো এ আইন প্রয়োগ করে তথ্য চাননি। কিন্তু তাদের অনেকের অভিজ্ঞতাও নেতিবাচক। তবে অধিকাংশই আইনটির পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ করেননি।
যারা তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাননি তাদের বক্তব্য, সাংবাদিকতার বাস্তবতা হলো তাৎক্ষণিক তথ্য এনে নিউজ করা। কিন্তু তথ্য অধিকার আইনে সেটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। যে কারণে তারা এ আইনে আগ্রহী নন।
এ বিষয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল খালিক বলেন, দুটো কারণে এই আইনের আওতায় তথ্য চাইনি। প্রথমত, প্রক্রিয়াটি দীর্ঘমেয়াদি। দ্বিতীয়ত, আমার আবেদনটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আলোচনা-পর্যালোচনা হবে, অনেক অফিসার নামটি মার্ক করবেন এবং সোর্স পরে তথ্য দিতে সাই ফিল করবেন।
তথ্য অধিকার জাতিসংঘ স্বীকৃত নাগরিক অধিকার। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োগে বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও রয়েছে আইন। ২০০৯ সালে করা ওই আইনটির মাধ্যমে ২০টি বিষয় ও আট প্রতিষ্ঠান ছাড়া যে কোনো বিষয় বা প্রতিষ্ঠানের কাছে তথ্য চাইতে পারবেন নাগরিকরা। নিয়মিত তথ্যপ্রবাহের মধ্যে থাকা সাংবাদিকদের আইনটি বেশি প্রয়োজন হলেও তাদের মধ্যেই দেখা যায় অনীহা।
সিলেট জেলা জজ আদালতের আইনজীবি এডভোকেট মো. আবুল কাশেম বলেন, ‘তথ্য অধিকার আইনে স্পষ্ট বলা আছে- যে কোনো তথ্য জনগণ পাওয়ার অধিকার রাখে। জনগণের পক্ষ থেকে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করেন এবং প্রচার করেন। আমি মনে করি, তথ্য অধিকার আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নির্ভর করবে যারা সাধারণ মানুষের পক্ষে তথ্য সংগ্রহ করেন- সেই সাংবাদিকদের ওপর। তারা যদি সচেতন থাকেন, তাহলে তথ্য না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। আইন অনুসরণ করলে তারা তথ্য দিতে বাধ্য।’
তথ্য অধিকার আইনে স্পষ্ট বলা আছে- যে কোনো তথ্য জনগণ পাওয়ার অধিকার রাখে। জনগণের পক্ষ থেকে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করেন এবং প্রচার করেন। আমি মনে করি, তথ্য অধিকার আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নির্ভর করবে যারা সাধারণ মানুষের পক্ষে তথ্য সংগ্রহ করেন- সেই সাংবাদিকদের ওপর।
সংবাদটি শেয়ার করুন।