প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

‘’‌‌‌‌যেমন কর্ম তেমন ফল’’

admin
প্রকাশিত
‘’‌‌‌‌যেমন কর্ম তেমন ফল’’

এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:
“ASYOU SO, SO YOU REAP”! কর্ম যাহাই করেন না কেন তার REFLECTION কিন্তু নিজেই ভোগ করবেন। ভাল কর্মের ফল যেমনি নিজে ভোগ করে আনন্দিত হবেন, তেমনি খারাপ কর্মের ফল নিজে অথবা রেখে যাওয়া উত্তারাধিকারী ভোগ করতে বাধ্য। এই বিশ্ব ভ্রমান্তর মালিক কে?

 

আল্লাহ! সুতরাং জমিনের উপর এক ইঞ্চি যায়গা তার দৃষ্টি গোচরের বাহিরে নহে। পাপ পূন্য যাহাই করেন না কেন, প্রতিটি মানুষের ডানে এবং বায়ে নেকির মুনকির নামে ২জন ফেরেশতা কাজের পুংঙ্খানুপুঙ্খ হিসাবে wjwce× করতেই আছেন। মন্দ কাজ লিখার ফেরেশতা সব কাজের হিসাব একটু দেরীতে লিখে থাকেন।কারন অপেক্ষা করতে থাকেন বান্দাটি যদি সংশোধন হয়ে যায়। উপরে থেকে অবলোকেন করতে থাকেন, এই বিশ্ব ভ্রমন্ডের মালিক “আল্লাহ”। যদি একত্ববাদে বিশ্বাসী হন, তাহলে এসব কথা মানতেই হবে।

 

আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। জীবদ্দশায় প্রতিটি কর্মের ফল কিন্তু নিজেকেই ভোগ করতেই হবে। তবে বুঝার যোগ্যতা থাকতে হবে। কাউকে প্রভাব খাটিয়ে হত্যা, গুম, অপহরণ করলেন। নিরবে বসে আছেন, এসব অপকর্মের স্বাক্ষী তো আর কেহ নেই। ভুলে গেলে চলবে না। এসব অপকর্ম তো-নেকির মুনকির ফেরেশতা তথা পৃথিবীর মালিক স্বয়ং আল্লাহ সবই দেখেছেন। নিশ্চত থাকেন, এ-সব অপকর্মের জবাব নিরবে নিবৃতে আপনি নিজে অথবা আপনার ছেলে মেয়ে অথবা অতি নিকটআত্মী যখন হত্যা, গুম, অপহরনের শিকার হবেন, তখন আপসোস করতে থাকবেন। কান্না কাটি করবেন।

 

পাগল হয়ে মালিকের ভূমি ত্যাগ করবেন। দুনিয়ার বিচার শেষ হলে ও কিন্তু পরকালের বিচার তো রয়েই গেল। দুনিয়ার জমিনে প্রভাবশালী মনে করে থাকেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে শয়তান আপনাকে পরিচালনা করিতেছে।

 

সেই শয়তান ইহকাল – পরকাল কোন কালেই সফর সঙ্গী হবে না। যেমন ১৯৯২ সালে ঢাকা শ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের ছাত্র মাহমুদ, সূর্য সেন হলের তারই সতীর্থ মামুন কে রাত ৪ ঘটিকার সময় হত্যা করে বীর দর্পে হলে ফিরে এল।

সকাল ৭ ঘটিকার সময় মাহমুদ মুজিব হলের পিছন দিকে এলাকা ছাড়ার জন্য যখল পথ খোজছিল, তখন তার এক সতীর্থ গুলি করে তাকে হত্যা করল।পুলিশের মাহা পরিদর্শক জনাব বেনজির আহমদ এই কিছু দিন পূর্বে হুংঙ্কার দিয়ে বলতেন এই করুমকা সেই করুমকা ইত্যাদি। কিন্তু অবসরে যাওয়ার পর তার ও আবার নিরাপত্তা দিতে হচ্ছে সরকার কে। যা অতিথ অভিজ্ঞতা বলে কোন মাহা পরিদির্শক কে এ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হয়নি।

 

যদিও এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাময়িক। তাঁর অপকর্ম কিন্তু সে নিজে আত্মসমালোচনা করলে বুঝতে দেরী হওয়ার কথা নহে। সে কিন্তু কতৃত্ববাদী শাসনে সহযোগীতার জন্য স্যাংশন প্রাপ্ত। অপকর্মের গ্লানি কিন্তু নিকটাত্মীয়রা ভোগ করতে হবে অনন্ত কাল। সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ. আহমদ। দেশ ত্যাগী।মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে সাহস পাচ্ছে না। ১/১১ এর খলনায়করা কেহ সুখে নেই। পিল খানার হত্যা কান্ডে কুশলীবেরা আত্মসমালোচনা করুন। এ হত্যা কান্ডের বিচার বিশ্ব ভ্রমান্ডের মালিকের জমিনে হবে। এটা নিশ্চত।এসব হত্যার খনায়করা পাবেন শাস্তি। আর ভিকটিমরা পাবে শান্তির উপহার। যা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা সে বিচারের ব্যবস্থা করবেন। কতিপয় ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে জুডিশিয়েল কিলিং মিশন বাস্তবায়নে যারাই সহযোগীতা করেছেন তাদের অধিকাংশ ইতি মধ্যে মালিকের ভূমি ত্যাগ করতে হয়েছে।পরকালে কি হবে তা কিন্তু আল্লাহ ভাল বলতে পারবেন।

 

যারা জীবিত আছেন, তাদের শাস্তি পাচ্ছেন কি দেখতে না? দেখার তো কথা। যেমন প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহা বাধ্যতা মূলক চাকুরী চ্যুত। দেশে দেশে ফেরারী জীবন যাপন করিতেছেন। সেটা কি শাস্তি নহে? তাঁর কুশিলবরা পর্দার আড়ালে থেকে যদিও হাসতেছেন। তাঁরা অনুভব করিতোছেন, হয়ত তাঁদের শাস্তি অবধারিত। সেই চিন্তা থেকে মুখ ফোচকে কেহ বলে ফেলেন ক্ষমতাচ্যুত হলে, জেনসাইড বা গনহত্যা নিশ্চিত।

 

আরও বলেন ১৯৭১ সালে যে পরিমান লোক মারা গেছে, এর চেয়ে বেশী হওয়ার আশংকা করিতেছেন।তাহলে বুজতে বাকি নাই, অপকর্ম নিশ্চয়ই সংগী হয়ে পথ হারা করে এ সব বলিয়ে নিচ্ছেন অদৃশ্য শক্তি। মদ্যপ ব্যক্তি যখন মদ পান করে তখন সব সত্য বলে দেয়। সে কিন্তু মদ্যপ অবস্থায় যা বলবে তা কিন্তু সত্যই বলবে। তখন তার হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। সদ্য প্রভাবশালী এক নেতা বলেই ফেললেন বাড়াবাড়ি করলে, জেলে ডুকিয়ে দেব।

 

আর ও বললেন শাপলা চত্ত্বরে হেফাজন কে যে পরিনতি ভোগ করতে হয়েছে, সে পরিনতি বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের (তাদের ভাষায়) সে পরিনতি ভোগ করতে হতে পারে। সাধু সাবদান! পূর্বে বললেন, আদালত শাস্তি দিয়েছেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। শাপলা চত্বরে কিছুই হয়নি। রং লাগিয়ে কিছু প্রতারক পরিবেশকে গোলাটে করতে চেয়েছিল। কিন্তু পারে নি। বলুন তো, তাহলে সত্য কথা কি বের হওয়া শুরু হয়ে গেল? আমজনতার চোখ, কান সজাগ। সবাই বুঝে কিন্তু সব কথা কি আর বলা যায়? একটি উদাহরন দিয়ে শেষ করতে চাই।এক গরিব ভদ্র লোক। ছেলে মেয়েদের আবদার বড় মাছ তাদেরকে খাওয়াতে হবে। বাজার থেকে তো আর কেনার সামর্থ্য নেই। মাছ ধরতে নদীতে গেলেন এবং সাহায্য চাইলেন আল্লাহ আমার ছেলে মেয়েদের আশাটা পূর্ন করে দেও। আশা পূর্ন হল। বিরাট বড় মাছ পেলেন। পথে জনৈক প্রভাবশালী পুলিশ অফিসারের চোখে সেই বড় মাছটির প্রতি পড়েগেল। মাছটি নিয়ে নিলেন জোর পূর্বক। মাছটি ছিল জীবিত।

ঐ প্রভাবশালী পুলিশ অফিসার কে মাছটি কামড় দিল। হাতের আংগুলের পচন শুরু হয়ে গেল। সেই পুলিশ অফিসারের চরম যন্ত্রনা সহ্য করতে হল। ডাক্তার একে একে অপারেশন করে সমস্ত হাত কেটে ফেললেন।পুলিশ অফিসার তখন এক দরবেশের স্মরনাপন্ন হলেন। দরবেশ বললেন এমন কাউকে কি কখনও জুলুম করেছেন?

 

 

আত্মসমালোচনা করুন। তখন প্রভাবশালী পুলিশ অফিসার বললেন হত দরিদ্র মানুষটির নিকট থেকে প্রভাব খাটিয়ে একটি মাছ এনেছিলাম এবং ঐ মাছটি আমার আংগুলে কামড় দিয়ে আঘাত করে।তখন থেকেই যন্ত্রনা শুরু।দরবেশ উপদেশ দিলেন, ঐ লোকটিকে খোজে বের করতে এবং তার কাছে ক্ষমা চাইতে। খোজতে আরম্ভ করলেন। তখন নদীতে গিয়ে দরিদ্র লোকটিকে পেলেন। পুলিশ অফিসার এক হাত নেই এবং পরনে রাষ্ট্রীয় পোশাক নেই চাকুরী বাকুরী কিছু নেই। তখন দরিদ্র লোকটিকে বললেন সেই পুলিশ অফিসার ক্ষমা চাইতে এসেছি।

 

আমি জোর করে আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাছটি নিয়েছিলাম। দরিদ্র ব্যক্তি আশ্চর্য্য হয়ে বললেন আপনি! আপনার কেন এই অবস্থা? দরিদ্র ব্যক্তিকে কান্না জড়িতে কন্টে বললেন, আমাকে ক্ষমা করুন।ক্ষমা না করলে দরবেশ সাহেবের ভাষায়, আমার সম্পূর্ন শরির পচে যাবে। তখন দরিদ্র ব্যক্তি বললেন, আমি তো আমার আল্লাহকে বলেছি। আমি অসহায়। পুলিশ অফিসার প্রভাবশালী। এর চেয়েও তো আপনি (আল্লাহ) প্রভাবশালী। আল্লাহ দরিদ্রের আর্থনাদ কবুল করে নিয়েছেন।

 

সুতরাং সৃষ্টি কর্তা ছাড় দেন, ছেড়ে দেন নাই।একথা থেকে নির্ধিদায় বলা যায়, যেমন কর্ম, তেমন ফল ভোগ করিতে বাধ্য হবেন।সাধু সাবধান!
লেখকঃ সভাপতি, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার, সিলেট।

সংবাদটি শেয়ার করুন।