প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৯শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে আতাউর রহমান হত্যার রহস্য উদঘাটন

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২০, ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে আতাউর রহমান হত্যার রহস্য উদঘাটন

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট মহানগরীর লাক্কাতুড়া এলাকায় মো. আতাউর রহমান হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। হত্যাকান্ডে জড়িত এক আসামীকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। ছিনতাইয়ে বাঁধা দেওয়ায় কিশোরগ্যাংয়ের হাতে প্রাণ হারান আতাউর রহমান- এমন তথ্য পেয়েছে পিবিআই।

পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান জানান, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই রাতে লাক্কাতুড়া সবুজ সংঘের ছড়ারপাড়ে মো. জিতু মিয়ার ছেলে মো. আতাউর রহমান রহমানকে (৩৮) দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় মো. জিতু মিয়া বাদী হয়ে একজনের নামোল্লেখ করে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ৯ মাস তদন্তের পর মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়।

পরে পিবিআই ডিআইজি (পূর্বাঞ্চল) মো. মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় এবং সিলেট জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) মো. তারিকুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হন।

পিবিআই টিম সিলেট কোতোয়ালি থানা এলাকা হতে ১৭ অক্টোবর আতাউর হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী আজিম উদ্দিনকে (২১) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামী জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ছিনতাই কাজে বাধা দেওয়ায় তারা তিনজন মিলে আতাউর রহমানকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে, পরে আতাউর মারা যান।

জিজ্ঞাসাবাদে আজিম উদ্দিন আরো জানায় যে, সে ও তার সঙ্গীয়রা পূর্বে পিবিআই কর্তৃক গ্রেফতারকৃত ইমন ওরফে চাকমা ইমন এবং সঙ্গীয় আসামি নিয়া ঘটনার দিন রাতে গাঁজা সেবন করে। পরে তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে শাহজালাল মাজার এলাকায় ঘুরাফেরা করতে থাকে। ভোর অনুমান ৫টার দিকে শাহজালাল মাজারের পিছন গেইটে তারা ছিনতাইয়ের জন্য অবস্থান করছিল।

তখন অজ্ঞাতনামা একজন ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সাচালক সাথে ১ জন যাত্রী নিয়ে তাদের সামনে এসে থামে। আসামীরা যাত্রীর নিকট গিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে যাত্রীর মুখ ও শরীর থেকে মদের গন্ধ পেয়ে তারা যাত্রী আতাউর রহমানকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আরো মদপান করার প্রলোভন দিয়ে আজিম ও তার সাথের দুইজন অটোরিকশা নিয়ে লাক্কাতুড়া এলাকায় যায়।

লাক্কাতুড়া সবুজ সংঘ ছড়ারপাড়ে যাওয়ার পর ইমন ওরফে চাকমা ইমন অটোরিক্সা ড্রাইভারকে ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে ছেড়ে দিয়ে আতাউরসহ তিন আসামী ছড়ারপাড়ের দিকে আগাইয়া যায়। ছড়ারপাড়ে পৌঁছার পর চাকমা ইমন সাথে থাকা সবকিছু দিয়ে দিতে আতাউরকে বলে।

আতাউর টাকা না দিয়ে উল্টো চাকমা ইমনের কলার চেপে ধরে। সাথে সাথে চাকমা ইমন চাকু বের করে আতাউরের দুই পায়ের উরুতে এবং নিতম্বের নিচে এলোপাথারী আঘাত করে এবং বাকি দুইজন বাঁশের লাঠি দিয়ে আতাউরকে এলোপাতাড়ি মারধর করে ফেলে যায়। এসময় আতাউরের কাছ থেকে আসামীরা ১টি মোবাইল ফোন সেট, ১টি রূপার চেইন, ব্রেসলেট ও সাথে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে আতাউরের চিৎকার শোনে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়। মামলার আসামী আজিম উদ্দিনকে পিবিআই আদালতে হাজির করলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

Sharing is caring!