এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন :
এরিষ্টটল বলেছেন “একটি গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সকল সার্বভৌম ক্ষমতা জনগনের হাতে ন্যস্ত’’ রাজনীতিবিদরা বলে থাকেন “সকল ক্ষমতার উৎস জনগন”। হালের রাজনীতিবিদদের মধ্যে বাইনকোলার দিয়ে খুজলে কি একজন পাওয়া যাবে জনগন তাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে? যেমনঃ শেখ হাসিনা বলেছেন, “স্বৈরাচারি শাসকেরা সবসময় চারদিকে ষড়যন্ত্র আর কুচক্রী দেখে”। কন্ট্রাডিকশন এখানেই। তিনি সবসময় বলতেন, সকল ক্ষমতার উৎস জনগন। কিন্তু তার শাসনকাল চলিতেছি জনগনকে উপেক্ষা করে। ডিক্টেটারের মত দেশ শাসন করিতেছেন। জনগনকে অবজ্ঞা করে প্রশাসন নির্ভর শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে জনগনকে বোকা ভাবিতেছেন। জনগন কিন্তু বোকা নহে ? সুযোগ একদিন জনগনের হাতে আসবেই। আর সেই সুযোগকে কালে লাগাবে জনগন। শুধু অপেক্ষা করুন। তখন বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যে সব বক্তব্য অতীতে দিয়েছিলেন, তার প্রতিদ্বনি শুনতে পাবেন। বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল মাধ্যমে। তখন নিজেকে শুধু ভাববেন অপরাধী হিসাবে। আপসোস করে কোন লাভ হবে না। বোকা জনগন তা কিন্তু ১৯৯০ সালে দুর্দন্ত প্রতাপশালী সৈরাচারি হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেখিয়েছে। শুধু ক্ষমতাচ্যুত করেই ক্ষান্ত হয়নি। লোকে বলে, “নয় বছরের রাজা, দশ বছরের সাজা”। যারা ই কথা এবং কাজে বিশ্বাস করে না তাদেরকে কোরআন-হাদিসের ভাষায় “মুনাফিকের চরিত্রের” সাথে তুলনা করা হয়েছে। মুনাফিকের “বেহেশত-দোযখ” কিছুই নাই।
গনতন্ত্র হচ্ছে “জনগনের” অদৃশ্য ক্ষমতা। এ ক্ষমতা স্থানীয় জনগন ভোটের মাঠেই যারাই চাষিয়ে বেড়াচ্ছেন, তারা কিন্তু টের পাচ্ছেন। পূর্বের দেওয়া প্রতিশ্রæতি নির্বাচনী ইশতেহার, পাওয়া না পাওয়া, কিভাবে কার সাথে কোন ধরনের ব্যবহার করিয়াছেন ইত্যাদি প্রার্থীর জবাবদিহি করতে হচ্ছে। যিনি-ই নির্বাচনে দাড়িয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের দেওয়া ইশতেহার কিন্তু জনগনের কাছে লিপিবদ্ধ আছে। নির্বাচিত হওয়ার পর হয়তঃ আপনি ভূলে যেতে পারেন। যারাই ভূলে যান, তাদের প্রত্যেককেই ৫ বৎসর পর যখনই জনগনের কাছে ভোট প্রার্থনা করতে আসবেন তখন কিন্তু সোজা উত্তর আপনাকেই দিতে হবে। জনগন ভালোবেসে নির্বাচিত করলে, আর তাদেরকে মূল্যায়ন করলে নির্বাচিত প্রতিনিধি পাবেন সবোর্”ছ সম্মান আর ভালোবাসা। যে কোন দুর্দিনে জনগনকে পাবেন পাশে।
নির্বাচিত প্রতিনিধি আমলা নির্ভর না হয়ে জনগননির্ভর হলে পাবেন সম্মান। যে কোন যৌক্তিক দাবী আদায়ে থাকবেন সুচ্ছার। পাশে পাবেন অদৃশ্য শক্তির মালিক বা জনগনকে। আপনার সাথে থাকা অদৃশ্য শক্তিদের ভয়ে, যৌক্তিক দাবী বাস্তবায়নে পাবেন প্রশাসনের সহযোগীতা। জনগন হবে উপকৃত। নির্বাচিত প্রতিনিধি হবেন সম্মানীত। অদৃশ্য শক্তিকে ধরে রাখার জন্য হবেন সোচ্ছার। যাতে পরবর্তী নির্বাচনে বেগ পেতে না হয়। যখনই জবাবদিহি নিশ্চিত হয়ে যাবে, রাষ্ট্রের মালিক বা ষ্টোক হোল্ডারদের ভোট প্রদানের ক্ষমতা নিশ্চিত হবে তখন ই হবে রাষ্ট্র উপকৃত। গনতন্ত্র বলবে, রাষ্ট্র তার দেওয়া প্রতিশ্রæতি রাষ্ট্রের নিকট সঠিকভাবে ফিরিয়ে দিয়েছে। সেজন্য রাষ্ট্রকে “ধন্যবাদ”। হালের রাজনীতিতে, আইন প্রনেতারা বিভিন্ন সভা সমাবেশে নিজে নিজেকে অপরাধীর মতো পরিচয় দিয়ে থাকেন, আপনাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বা এমপি। উচ্চস্বরে জনগন তখন প্রদিবাদ করে বলে থাকেন, কে আপনাকে নির্বাচিত করেছেন? আমরা তো আপনাকে জনপ্রতিনিদি হিসেবে নির্বাচিত করিনি? কি লজ্জা ? এসব জনপ্রতিনিধিদের ১৫ জুন ২০২২ইং তারিখে বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচন হবে এবং প্রার্থীরা কিভাবে জনগনের দ্বারে ঘোরে বেড়াচ্ছে এবং জনগন তাদের কে কিভাবে মূল্যায়ন করিতেছে তা দেখার জন্য আহŸান জানাচ্ছি।
লেখকঃ সভাপতি, সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন, বিয়ানীবাজার, সিলেট।
সংবাদটি শেয়ার করুন।