প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বিয়ানীবাজারে খাদ্যের অভাবে বানর লোকালয়ে

admin
প্রকাশিত
বিয়ানীবাজারে খাদ্যের অভাবে বানর লোকালয়ে

 

স্টাফ রিপোর্টার:

বিয়ানীবাজারে খাদ্যের অভাবে হাজারো বানর এখন লোকালয়ে। এরা দলবেঁধে হানা দিচ্ছে গ্রামবাসীর ফসল ক্ষেতে ও পথচারীদের ওপর। উপদ্রবে অতিষ্ঠ হলেও বিয়ানীবাজার পৌরএলাকার একাধিক গ্রামবাসী আগলে রেখেছেন এদের ।

পৌরশহর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরের গ্রাম খাসা। এ গ্রামের ঝোপ-জঙ্গলে মানুষের পাশাপাশি বহুবছর ধরে হাজারেরও বেশি বানর বাস করছে ।

ওই গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির ঘরের চালে, গাছের নিচে কিংবা গাছের ওপরে বসে থাকা এ সব বানর দলবেঁধে বসে থাকে। পথচারীরা কেউ কিছু দিলেই দলবেঁধে এসে খেতে শুরু করে। করোনায় মানুষের আসা যাওয়া কম হওয়াতে দেখা দিয়েছে এ বানর গুলোর খাদ্য সংকট। তাই খাবারের জন্যে ঝোপ-জঙ্গল ছেড়ে এলাকার লোকালয়ে প্রায়ই উপদ্রব করছে।

 

এলাকাবাসী বলছেন, দিন দিন বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় ও খাবার না পেয়ে বানরগুলো লোকালয়ে এ উপদ্রব করছে। তবে এখানকার বানরগুলোর সঙ্গে স্থানীয় মানুষের সম্পর্ক যে কতটা নিবিড় তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। মাঝে মধ্যে স্থানীয় মানুষের হাত ধরে হাঁটতেও দেখা যায় বানরদের। তবে এদের সঙ্গে দুষ্টুমি করলে কোনো ছাড় দেয় না।

কথিত আছে, বহুবছর আগে এখানকার ভূমি অফিসের এক তহশিলদার একটি পুরুষ বানর পুষতেন। বদলি হয়ে তিনি চলে গেলেও রেখে যান বানরটি। পরে অপর এক তহশিলদার আরেকটি স্ত্রী বানর এনে দুটিকেই জঙ্গলে ছেড়ে দেন। সেই থেকে বাড়তে থাকে বানরের সংখ্যা।

খাসা গ্রামের জামিল আহমদ জানান, আমাদের গ্রামে প্রাচীনকাল থেকেই বানরের বসবাস। তারা এখানের বনজঙ্গলের প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বেঁচে আছে। বানরগুলো স্থানীয়দের বাগানের আম,কাঁঠাল, লিচু, ফলমূল, কলা ও শাকসবজি খেয়ে ফেলছে। কেউ বানরকে মারতে গেলে জোটবদ্ধ হয়ে তারা গাছের ডালপালা নিয়ে তেড়ে আসে। এমনকি ঘরে প্রবেশ করে মালপত্র নিয়ে যায়। এতো অত্যাচার সহ্য করেও এলাকাবাসী আগলে রেখেছেন প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক এসব বানর।

 

কসবা গ্রামের তৈয়ব মিয়া জানান, বানরের দল ভেংচি কেটে তাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। বর্তমানে খাদ্য সংকটে পড়েছে বানরগুলো।

কসবা ত্রিমুখী বাজারের ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন জানান, করোনার এই সময়কালে বানরগুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। যার ফলে এলাকাবাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। মাঝে মধ্যে বাড়ী-ঘর, দোকানপাটে ঢুকে সব কিছু তছনছ করে যা পাচ্ছে তাই খেয়ে ফেলছে। এ বানরের জন্যে ঠিক মতো দোকানদারিও করতে পারছি না।

জোসনা বেগম নামে এক গৃহিণী জানান, বানরগুলো জন্য ঘরে মধ্যে ভাত তরকারি রাখতে পারিনা। খাদ্যের অভাবে এগুলো যখন তখন ঘরের মধ্যে ঢুকে হাড়িপাতিল উল্টিয়ে সবকিছু খেয়ে ফেলে। মাঝে মধ্যে ঘর থেকে হাড়ি পাতিল নিয়ে যায়। ঘরের বেড়া তছনছ করে। আবার যদি তাদের কোন কিছু করতে যায়, তাহলে দলবেঁধে প্রতিহত করতে আসে।

 

 

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, সরকারিভাবে বানরের খাবারের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার কিছু নেই। তবে স্থানীয়ভাবে বানরের খাবারের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সে চেষ্টা করবেন বলে জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন।