সিলেট অফিস:
চারদীয় জোট সরকারের আমলে অসীম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন আবুল হারিছ চৌধুরী। হাওয়া ভবনের নিয়ন্ত্রণকর্তাদের একজন ছিলেন তিনি। ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব। তার ক্ষমতার দাপটের কাছে কোণঠাসা ছিলেন খোদ বিএনপিরই অনেক রথি-মহারথি।
সেই দুর্দণ্ড প্রতাপশালী রাজনীতিকের মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোয়াশা। চাচাতো ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলছেন হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন লন্ডনে। আর তার মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর দাবি তার বাবা কখনো যুক্তরাজ্যেই যাননি। ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনের পর থেকে তিনি ঢাকায়ই ছিলেন। ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। একসময় সিলেট বিএনপির রাজনীতিতে বড় ভূমিকা রাখা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবরে নিরব সিলেট বিএনপি। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার মরদেহ সিলেটে গ্রামের বাড়িতে এনে দাফনের দাবি জানালেও জেলা ও মহানগর বিএনপি নেতারা নিরব ভূমিকা পালন করছেন। পরিবারের কাছ থেকে মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হলে কোন শোকবার্তাও দেয়া হয়নি দলের পক্ষ থেকে।
ক্ষমতায় থাকাকালে হারিছ চৌধুরীর সাথে সিলেট বিএনপির যেসব নেতার দহরম মহরম সম্পর্ক ছিল মৃত্যু সংবাদে তারাও মুখ খুলতে নারাজ। সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার তো এখনো নিশ্চিতই নন হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর ব্যাপারে। তার ভাষ্যমতে, ‘আশিক চৌধুরী বলছেন, হারিছ ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে লন্ডনে। আর মেয়ে বলছে ঢাকায়। আমরা আসলে এখনো হারিছ ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের মধ্যে আছি।’
সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম বলেন, ‘জীবন-মৃত্যু নির্ধারিত। হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর শুনেছি। আপাতত দলের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুতে কোন শোক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়নি।’
সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী প্রশ্ন তুলেছেন হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু ও দাফনের খবর গোপন রাখা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘হারিছ চৌধুরীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন রয়েছে। তার মৃত্যুর খবর ও দাফন কেন গোপন রাখা হলো- এটাই এখন মূখ্য বিষয়। হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর ব্যাপারে আমরা কেবল অবগত হলাম। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে শোক কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
সিলেট জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু বলেন, ‘বিএনপির জন্মলগ্ন থেকেই হারিছ চৌধুরী দলটির সাথে সম্পৃক্ত। সত্যি সত্যি তাকে ঢাকায় দাফন করা হলে সেখান থেকে মরদেহ এনে সিলেটে দাফন করা উচিত।’
নেতারা নিরব থাকলেও হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। হারিছ চৌধুরীর মরদেহ ঢাকায় যেখানে দাফন করা হয়েছে সেখান থেকে এনে সিলেটে অথবা তার গ্রামের বাড়িতে দাফনের দাবি জানাচ্ছেন তারা।
সংবাদটি শেয়ার করুন।