প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

বিশ্বনাথে অর্থের কাছে পরাজিত তৃণমূলের মতামত!

admin
প্রকাশিত
বিশ্বনাথে অর্থের কাছে পরাজিত তৃণমূলের মতামত!

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:
তৃণমূলের ভোটাভোটিতে (২১ ডিসেম্বর) ২০টি ভোটের মধ্যে ১০টি ভোট পেয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নে প্রাথমিকভাবে বিজয়ী হয়েও কেন্দ্রের চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তে (১ জানুয়ারী) নৌকার টিকেট পাননি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিগত নির্বাচনে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতাকারী শংকর চন্দ্র ধর। অথচ প্রাথমিকভাবে ৭টি ভোট পেয়ে প্রাথমিকভাবে ২য় হয়েও কেন্দ্রের চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তে নৌকার টিকেট পেয়েছেন বিএনপি-হেফাজত পরিবারের সদস্য সৌদি আরব প্রবাসী আরশ আলী গণি। আর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মুহিবুর রহমান সুইট পান ৩টি ভোট।

তৃণমুলে হেরেও কিভাবে প্রবাসী আরশ আলী গণি নৌকার মনোনয়ন পেলেন এ নিয়ে উপজেলার সর্বত্র উঠেছে আলোচনা- সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত প্রবাসীর টাকার কাছে পরাজিত হয়েছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের দাবী, কেন্দ্রের কাছে যদি তাদের (তৃণমূলের) মতামতের কোর গূরুত্ব নাই থাকে তবে কেন ওই ভোটাভোটি।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী আরশ আলী গণি বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী পরিবার জেদ্দার সভাপতি। তবে তিনি (আরশ) আওয়ামী লীগের কোন অঙ্গ বা সহযোগী কোন সংগঠনের সাথে জড়িত নন। এমন কি তার পরিবারের কেউই আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত নয়। প্রবাসী আরশ আলী গণিন আপন ছোট ভাই আনছার মাহমুদ ছিলেন খাজাঞ্চী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও আবিদ মাহমুদ গণি খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক এবং আপন চাচাতো ভাই শওকত আলী খাজাঞ্চী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। আর তার বাবা প্রয়াত আব্দুল গণি ছিলেন ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য। পারিবারিকভাবে তারা এলাকায় আওয়ামী লীগ এন্ট্রি হিসাবে পরিচিত। আওয়ামী লীগ দলের সাথে যুক্ত না হয়েও বা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যোগদান না করে কিভাবে নৌকার মনোনয়ন পেলেন সেই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।

 

এ ব্যাপারে তৃণমুলে বিজয়ী প্রার্থী শংকর চন্দ্র ধর বলেন, তৃণমুলে, উপজেলা, জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাব আমার পক্ষে গেলেও কালো টাকার কাছে আমি হেরে গেছি। ব্যক্তি যেই হোক নৌকার পক্ষে কাজ করতে দলকে সংগঠিত করা হচ্ছে যাতে নৌকার বিজয় নিশ্চিত হয়। আর আমি কখনও নৌকার বিরুদ্ধে যাব না, আজীবন নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে জীবন দিয়ে হলেও কাজ করে যাব।

 

অপর প্রার্থী মুহিবুর রহমান সুইট বলেন, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন নির্বাচনে বিএনপি-হেফাজতের হাত থেকে স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা রক্ষা করা যায়নি। বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় আওয়ামী এন্টি পরিবারের হাতে নৌকাকে বিক্রি করে দেয়া হল। দূর্দিনের কর্মীদের অবমূল্যায়ন করে অনুপ্রবেশকারীর হাতে নৌকা দিয়ে স্বাধীনতার প্রতীক নৌকাকে কলংকিত করা হয়েছে। তবে সবকিছুর পরে নৌকা প্রতীক যেখানে আমি, আমরা সেখানেই থাকবো।

 

আওয়ামী লীগের কোন শাখার সদস্য তা বলতে না পারলেও নিজেকে আওয়ামী লীগের সদস্য দাবী করে প্রবাসী আরশ আলী গণি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত আছি। আমি বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী পরিবার জেদ্দার সভাপতি। আর নিজের পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের নেতা বা সমর্থক আছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বুঝতে পারছি না, এখন ব্যস্ত, পরে কথা বলছি বলে ফোন রেখে দেন প্রবাসী আরশ আলী গণি।

 

এবিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমদ বলেন, নৌকার মনোনয়ন দিতে তৃণমুলের ভোটের পাশাপাশি স্থানীয় ভোটের মাঠ নিয়ে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট হয়। তারই প্রেক্ষিতে ভোটের মাঠের অবস্থান অনুযায়ী কেন্দ্র প্রার্থী নির্ধারণ করে। তিনি বলেন, আরশ আলী গনি একজন প্রবাসী, গত ইউনিয়ন নির্বাচনে তিনি নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। ইতিমধ্যে এলাকায় তিনি একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন। তাছাড়া উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে তার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। প্রার্থী বিবেচনা না করে উন্নয়নের প্রতিক নৌকায় ভোট দিতে তিনি ইউনিয়নবাসীকে আহবান জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন।