প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

জকিগঞ্জে ‘নৌকার মাঝি’ বড় ভাই, লাঙলের প্রার্থী ছোট ভাই

admin
প্রকাশিত
জকিগঞ্জে ‘নৌকার মাঝি’ বড় ভাই, লাঙলের প্রার্থী ছোট ভাই

 

জকিগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিলেটের জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আপন দুই চাচাতো ভাই ইকবাল আহমদ চৌধুরী একল ও রিমন আহমদ চৌধুরী।

তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আলোচনায় চলছে ইউনিয়ন জুড়ে। দুই ভাই দুই দলের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে পুরো উপজেলায়। এ নিয়ে ভোটারদের মাঝে নানামুখী আলোচনা সমালোচনা চলছে। দুই ভাইয়ের ভোট যুদ্ধে সব শেষে ফলাফল কি হবে তা নিয়ে এখন থেকেই প্রশ্ন্ন উঠছে।

বড়ভাই ইকবাল আহমদ চৌধুরী একল উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভোটে তিনি প্রাথমিকভাবে নৌকার মাঝি চূড়ান্ত হয়েছেন।

অন্যদিকে তাঁর আপন চাচাতো ছোট ভাই সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবক পার্টির আহবায়ক রিমন আহমদ চৌধুরী জাতীয় পার্টির তৃণমূলের মতামতে লাঙল প্রতীক পেয়েছেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্র থেকে তাঁর হাতে প্রার্থীতার চিঠিও তুলে দেয়া হয়েছে। রিমন আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে লাঙল প্রতীকের প্রত্যাশী ছিলেন উপজেলা যুব সংহতির সাবেক আহবায়ক জালাল উদ্দিন।

গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জালাল উদ্দিন লাঙল নিয়ে ২৮শত ৮৫ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হলেও এবার দলীয় প্রতীক বঞ্চিত হয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে এ উপজেলার ৯টি ইউপির সাথে সুলতানপুর ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার সুলতানপুর ইউনিয়নের গণিপুর, সহিদাবাদ, ঘেছুয়া, তিরাশী, সুলতানপুর, ইছাপুর, গোয়াবাড়ি, সিরাজপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই ভাইয়ের ভোটের লড়াই ভোটারদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজী নয়। দুজনই দুই প্রতীকে ভোট চেয়ে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ড নিয়েও আলোচনা-সমালোচনার কমতি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে।

ইউনিয়নের দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চেয়ারম্যান পদে দুই রাজনৈতিক দলের প্রতীকে আপন চাচাতো ছোট ভাই-বড় ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাঁর দুজন ভোটের মাঠে থাকলে ফলাফল কতটা আশানুরূপ হয় সেটাই দেখার অপেক্ষায় ভোটারগণ।

ওই দুই ভাই ছাড়াও এ ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, গত নির্বাচনের জাপার হেভিওয়েট প্রার্থী জালাল উদ্দিন, খেলাফত মজলিস নেতা বুরহান উদ্দিন, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহবায়ক হাসান আহমদ।

বাবুর বাজারের একটি হোটেলের মালিক আব্দুল আহাদ বলেন, হোটেলে আগত স্থানীয় বেশির ভাগ ব্যক্তি ওই দুই ভাইয়ের লড়াই নিয়ে কথা বলছে। কেউ কেউ দুই ভাইয়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ড নিয়ে বিশ্লেষণও করছেন।

সুলতানপুর ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, নৌকার প্রার্থী ইকবাল আহমদ চৌধুরী একল ঐ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি জনপ্রিয়। আওয়ামী নেতাকর্মীরা তাঁকে বিজয়ী করতে মাঠে কাজ করছে। তাঁর চাচাতো ভাই অন্যদলের প্রার্থী হয়েছেন সেটা রাজনৈতিক ব্যাপার। পারিবারিকভাবে তারা ভাই ভাই হলেও রাজনৈতিকভাবে এখন দুই দলের প্রার্থী। বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবেই এখন দেখছি।

সুলতানপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ওলিউর রহমান বলেন, দলীয় আদর্শগত দিক থেকে তাঁরা দুই ভাই জাতীয় দুই প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী রিমন চৌধুরীর একটি ক্লিন ইমেজ রয়েছে। তাঁর বড় ভাই নৌকার প্রার্থী হয়েছেন সেটা তাঁর দলীয় সিদ্ধান্ত। জাপার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আমরা কাজ করবো।

জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী রিমন চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, তিনি তাঁর বড় ভাই ইকবাল আহমদ চৌধুরীকে এখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে দেখছেন। ভোটের মাঠে পারিবারিক সম্পর্ক মুখ্য বিষয় নয়। আওয়ামী লীগের প্রতীকে মানুষ ভোট দেবেনা। জনগন পরিবর্তন চায়। উন্নয়নের জন্য লাঙল মার্কায় ভোট দেবেন ভোটাররা। ভোটের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা প্রমাণ হবে। দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের চাপে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইকবাল আহমদ চৌধুরী একল বলেন, বিগত নির্বাচনেও তিনি বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। গ্রাম পর্যায়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নের জোয়ার পেতে ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে তাঁকে বিজয়ী করবে। ছোট ভাই রিমন চৌধুরী জাপা থেকে নির্বাচন করছেন সেটা তার দলীয় ব্যাপার। ছোট ভাইয়ের কারণে নৌকা প্রতীকের ভোটে প্রভাব পড়বে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন।