প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্রলীগের আফসানাকে হেনস্তার ভিডিও হিন্দু মেয়েকে নির্যাতনের দাবি করে প্রচার

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ০১:১২ অপরাহ্ণ
ছাত্রলীগের আফসানাকে হেনস্তার ভিডিও হিন্দু মেয়েকে নির্যাতনের দাবি করে প্রচার

প্রজন্ম ডেস্ক:

বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক একটি ভিডিও দেশ-বিদেশে ব্যাপক ভাবে ছড়ানো হয়েছে। কিন্তু ভিডিওটি যে কারণে ছড়ানো হয়েছে তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আবার কিছু মানুষ বিশদে না জেনে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশে এক হিন্দু মেয়েকে নির্যাতন করার পর পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে উত্তেজিত জনতাকে এক মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতনের পর একটি পুকুরে নামতে বাধ্য করতে দেখা যায়।

সুইডেনে একাধিকবার প্রকাশ্যে কোরআন পুড়িয়ে বিতর্কিত ইরাকি বংশোদ্ভূত সালওয়ান মোমিকা সম্প্রতি এবং গত আগস্টে একই ভিডিও তার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করেন। আগস্টে তার পোস্ট করা উক্ত দাবির ভিডিওটি প্রায় এক কোটি ৯ লাখ বার দেখা হয়েছে।

এ ছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ৬৯ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার ঘটনাটি অনুসন্ধান করে দেখেছে, বাংলাদেশে হিন্দু মেয়েকে নির্যাতনের পর পানিতে ‍ডুবিয়ে হত্যা করার দাবিটি সঠিক নয়। হেনস্তার শিকার মেয়েটি মুসলিম। তার নাম আফসানা ইবাদ টিকলি। তিনি ছাত্রলীগ নেত্রী। তার মারা যাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সাকির উল্লাহ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৭ আগস্ট প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটির একটি বর্ধিত সংস্করণ খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভাইরাল ভিডিওটির শেষাংশে ওই নারীকে শুধু পুকুরে নিয়ে যেতে দেখা গেলেও এ ভিডিওটিতে তাকে পুনরায় পুকুর থেকে সুস্থ অবস্থায় তুলে আনতেও দেখা যায়। এ ছাড়াও ভিডিওটির শেষের দিকে একজন ব্যক্তিকে এসে ওই নারীকে নিয়ে যেতেও দেখা যায়। পাশাপাশি জানা যায়, ভিডিওটি গত ৭ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধারণ করা হয়েছে।

বাংলা মিরর নিউজ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ৮ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনতার হাতে ছাত্রলীগ নেত্রী আটক শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একই ঘটনার আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৫ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ওই ভিডিওর সঙ্গে আগের ভিডিওর মিল রয়েছে। তবে এই ভিডিওটির শেষাংশে হেনস্তার শিকার ওই নারীকে নিয়ে আগের ব্যক্তিকে একটি রিকশায় করে চলে যেতে দেখা যায়।

পরবর্তী অনুসন্ধানে মোহাম্মদ মোস্তফা নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১০ আগস্ট প্রচারিত একটি আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওতে হেনস্তার শিকার নারীর ব্যাগ থেকে প্রাপ্ত জিনিসগুলো দেখানো হচ্ছে। ভিডিওটির নিচের দিকে হেনস্তার ঘটনার কয়েকটি ছবিও দেখতে পাওয়া যায়।

এ ছাড়াও ভিডিওতে এক নারী হেনস্তাকারীকে হেনস্তার শিকার নারীর ব্যাগ থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র বের করে ক্যামেরার সামনে প্রদর্শন করতে দেখা যায়। ভিডিওতে হেনস্তার শিকার নারীর ব্যাগ থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার পোলিং অ্যাজেন্ট সংক্রান্ত পরিচয়পত্র বের করে দেখাতে দেখা যায়। যেখানে নাম আফসানা ইবাদ উল্লেখ করা আছে।

Sharing is caring!