স্টাফ রিপোর্টার:
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষের ঘটনার পর মাঠ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকার। মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের কেউই মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইসলামের স্বার্থে কোনো পক্ষকে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানানো হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তাবলিগের দুই পক্ষের হতাহতের ঘটনায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে মঙ্গলবার গভীর রাতে মাঠ দখল নিয়ে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থি অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে শুরায়ে নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান সময় সংবাদকে জানান, ‘রাতের আঁধারে সাদপন্থীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শুরায়ে নেজামের তাবলিগের সাথীদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে শাতাধিক আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটে। তারা মাঠ দখলে নিয়ে নেয়।
শুরায়ে নেজামের সাথীরা আহত অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে অবস্থান করছেন। আর তাই কিছু সাথী বিশ্ব ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দেয়ার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন।’
নিহতের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘সাদপন্থীদের হামলায় আমাদের তিন সাথী ইন্তেকাল করেছেন।’
এদিকে সাদপন্থীদের মিডিয়া সমন্বয়ক মুহাম্মদ সায়েম সময় সংবাদকে বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার মাঠ আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আমাদের বেলাল হোসেন নামের এক সাথীর ইন্তেকাল হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ৩টার দিকে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীরা বাহির থেকে হঠাৎ হামলা চালায় বলে দাবি করে জুবায়েরপন্থীরা। এতে শতাধিক আহতের ঘটনা ঘটে।
হতাহতদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০) ও বেলাল হোসেন (৫৫)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ৩টার দিকে সাদপন্থীরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করতে থাকে। এ সময় মাঠের ভেতর থেকে জুবায়েরপন্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
জবাবে সাদপন্থীরাও পাল্টা হামলা চালায়। একপর্যায়ে সাদপন্থীরা মাঠে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে রাতে দুজন ঘটনাস্থলে ও বুধবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টঙ্গী পশ্চিম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকন্দার হাবিব। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা দুজন নিহতের তথ্য পেয়েছি। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে প্রশাসন।
টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার হাফিজুল ইসলাম জানান, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে দুপক্ষের সংঘর্ষে হতাহতদের হাসপাতালে আনা হয়। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আহত কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Sharing is caring!