প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ‘ঐতিহাসিক’ সমুদ্র সংযোগে ঘুমহীন ভারত

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১৯, ২০২৪, ০১:৫৮ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ‘ঐতিহাসিক’ সমুদ্র সংযোগে ঘুমহীন ভারত

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

গত ৫০ বছরে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সমুদ্রপথে যোগাযোগ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে এই ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে পারে, এমন সম্ভাবনা রয়েছে।

 

গত ১১ নভেম্বর পাকিস্তানের পণ্যবাহী জাহাজ ইউয়ান জিয়াং ফা ঝান চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। এ ঘটনাকে ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক পরিবর্তনের প্রচেষ্টা বলেই মনে করছেন বিশ্লকেষকরা।

 

জাহাজটি বাংলাদেশের তৈরি পোষাকশিল্পের জন্য কাঁচামালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বহন করেছে। আগে পাকিস্তান থেকে মালামাল আমদানির ক্ষেত্রে সরাসরি দেশের বন্দর ব্যবহার করতে দিতো না বাংলাদেশ। সেক্ষত্রে শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া অথবা সিংগাপুর হয়ে ঘুরে আসতে হতো। সমুদ্রপথের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের পেছনে পণ্য পরিষেবা সহজ করার পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক দুই দেশের মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতির প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়।

 

 

স্থানীয় ঐক্যে পরিবর্তন:

এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির পরিবর্তন দেখা গেলো। বেশ কয়েক দশক ধরেই দুই দেশের কুটনৈতিক সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব ছিল। বিশেষত, শেখ হাসিনার শাসনামলে এই সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছিল। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব দিয়েছেন। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন তিনি। সম্পর্কের এই ‘নতুন পাতায়’ ইউনুস অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং স্থানীয় স্থিরতার ছবি আঁকতে চান।

 

নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ:

 

ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক পুণর্গঠনের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগপূর্ণ দৃষ্টি রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কাছাকাছি হওয়ায় বন্দরটিতে পাকিস্তানের ঢোকা নিয়ে অস্বস্তিতে ভুগছে দিল্লি।

২০০৪ সালে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সাহায্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চীনা গোলাবারুদ ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পর থেকেই সমুদ্র সংযোগের বিষয়ে ভারত সতর্ক থাকার চেষ্টা করে।

এ ছাড়া নেশাজাতীয় দ্রব্য চোরাচালানে পাকিস্তানের কুখ্যাতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে ভারতে এসব ঢুকে পড়ার আশংকা করছে দিল্লি।

 

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েন

দিল্লীর সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন চলছে। তবে ড. ইউনুসের মতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক স্থানীয় কুটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। দুইদেশের উন্নতি, শান্তি ও স্থিরতার খাতিরে বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগের বিকল্প নেই।

তবুও বাংলাদেশের বাজনৈতিক পট পরিবর্তন দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল করে দেবে, মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাবের উত্থানে উদ্বিগ্ন দিল্লি। সূত্র: এনডিটিভি

Sharing is caring!