প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

দুদক: মামলা ঝুলছে, সুবিধায় আসামিরা

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ৫, ২০২৫, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ
দুদক: মামলা ঝুলছে, সুবিধায় আসামিরা

Manual2 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

Manual7 Ad Code

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাত হাজারের বেশি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩৩১টি মামলা সুপ্রিম কোর্টে। আর ঢাকাসহ দেশের নিম্ন আদালতগুলোতে বিচার চলছে ২ হাজার ৮৩০টি মামলার। বছরের পর বছর মামলাগুলো ঝুলে থাকায় আসামিরা সুবিধা পাচ্ছেন। তারিখের পর তারিখ পেছানোর প্রক্রিয়ায়, বিশেষ করে অভিযুক্ত সরকারি চাকরিজীবীদের কেউ কেউ অবসরে যাওয়ার পর মামলা সচল করতে উদ্যোগী হন। তবে সম্প্রতি মামলাগুলো সচল করতে প্রস্তুতি নিয়েছে দুদক। ইতোমধ্যে প্যানেল আইনজীবী পরিবর্তনেরও প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

Manual5 Ad Code

এ বিষয়ে দুদকের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেন, ‘মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়টি দুদকের একার পক্ষে সমাধানযোগ্য নয়। তার পরও মামলার সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে দুদক সব সময় সচেষ্ট। ৫ আগস্টের পর দুদকের কিছু আইনজীবী যোগাযোগ বন্ধ করেছেন। তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে সেসব সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন করে আইনজীবী নিয়োগ করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামীতে মামলা পরিচালনায় দুদকের পক্ষ থেকে কোনো রকম সমস্যা থাকবে না।’

বিভিন্ন আদালতে দুদকের মামলা বছরের পর বছর বিচারাধীন থাকাসহ নানা কারণে দুর্নীতিতে জড়িতদের আশানুরূপ সাজা হচ্ছে না। সময়মতো সাক্ষী, প্রমাণ ও কিছু আইনজীবীর আন্তরিকতার অভাবে সহসাই মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে না। পুরোনো কয়েক হাজার মামলা বিচারাধীন থাকতেই নতুন মামলা যুক্ত হচ্ছে। ফলে প্রতিবছরই দুদকের বিচারাধীন মামলার সংখ্যা বাড়ছে।

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষা সনদ জালিয়াতির অভিযোগে মুজিবনগর সরকারের কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার পরিতোষ কুমার দাসের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। এরপর তিনি এ মামলায় দুদকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন। গত আট বছরে অন্তত ১৮০ বার শুনানির তারিখ পেছানো হয়। আজও মামলাটির নিষ্পত্তি হয়নি। একইভাবে ২০১৬ সালে একই অপরাধে আরেক সাব-রেজিস্ট্রার মিনতী দাসের বিরুদ্ধেও মামলা ও পরবর্তী সময়ে চার্জশিট দেওয়া হয়। এ মামলার শুনানির তারিখ ১৫১ বার পিছিয়েছে। মামলাটি বর্তমানে কার্যতালিকার বাইরে আছে (আউট অব লিস্ট)। ফলে এ মামলার নিষ্পত্তি কবে হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। মিনতী দাস বর্তমানে ঢাকার পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত। এভাবে দুদকের কয়েক হাজার মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।

Manual8 Ad Code

দুদকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে দুদকের অন্তত ৪ হাজার ৩৩১টি মামলা বিচারাধীন আছে। এর মধ্যে হাইকোর্টে ৩ হাজার ৭২৬টি এবং আপিল বিভাগে আছে ৬০৫টি। ঢাকাসহ দেশের নিম্ন আদালতগুলোতে মামলা রয়েছে ৩ হাজার ৪০৭টি। এর মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের ৩ হাজার ৬৬টি এবং বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরো আমলের মামলা ৩৪১টি। অবশ্য হাইকোর্টের আদেশে ২৩৬টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ফলে নিম্ন আদালতে ২ হাজার ৮৩০টির বিচার চলছে।

Manual6 Ad Code

এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৭৯টি। এর মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে ৩ হাজার ৭০১টি ও আপিল বিভাগে ৫৭৮টি। ঢাকাসহ নিম্ন আদালতে মামলা ছিল ৩ হাজার ৪১০টি। এর মধ্যে দুদকের মামলা ছিল ৩ হাজার ৬৬টি। প্রকৃত অর্থে গত এক বছরে বিচারাধীন দুদকের মামলার সংখ্যা মোটেও কমেনি। ব্যুরো আমলের মামলা কমেছে মাত্র তিনটি।

একইভাবে ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টে দুদকের মামলা ছিল ৪ হাজার ৬৪১টি। এর মধ্যে হাইকোর্টে ৪ হাজার ১৮টি ও আপিল বিভাগে ৬২৩টি। ঢাকাসহ নিম্ন আদালতে মোট মামলা ছিল ৩ হাজার ৩৫৩টি। ওই সময়ে হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত ছিল ৪২৬টি। অর্থাৎ বিচার চলমান ছিল ২ হাজার ৯২৭টি মামলার।

সার্বিকভাবে প্রতিবছর দুদক যে হারে মামলা করে, সেই হারে নিষ্পত্তি না হওয়ায় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। দুদকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুদকের মামলায় মোট নিষ্পত্তির হার মাত্র ১ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০২৪ সালে মোট নিষ্পত্তির হার ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে মোট নিষ্পত্তির হার ছিল ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code