প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

প্রেমের টানে ফিলিপাইনের দুই তরুণী রাজশাহীতে

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৮, ২০২৪, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ণ
প্রেমের টানে ফিলিপাইনের দুই তরুণী রাজশাহীতে

নিউজ ডেস্ক:
চারজনেরই পরিচয় ফেসবুকে। তাদের দেশ ভিন্ন, ভাষাও আলাদা। বড় হয়েছেন পৃথক সংস্কৃতিতে। এমন অনেক অমিল থাকা সত্ত্বেও এক হয়েছেন ভালোবাসার টানে। প্রেম মানে না কোনো ধর্ম-বর্ণ, যা এ চারজন প্রমাণ করে দিয়েছেন।

ভালোবাসার মানুষকে পেতে তারা এসেছেন প্রেমিকের কাছে। সিনেমাকেও হার মানিয়েছে তাদের ভালোবাসা। এজন্যই সব বাধা উপেক্ষা করে নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন প্রেমিকের সঙ্গে ঘর করতে।

প্রথমে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। তারপর প্রেম। এরপর সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার তানোরে এসে বিয়ে করেন ফিলিপাইনের দুই তরুণী।

এই দুই দম্পতি হলেন- বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের রাকিবুল ইসলাম (২২) ও ফিলিপাইনের জাম্বোয়াঙ্গা উপদ্বীপ অঞ্চলের খাদিজা ইসলাম (২২)।

অন্যজন হলেন, একই ইউনিয়নের মালশিরা গ্রামের রেজাউল করিম (৩৩) ও ফিলিপাইনের নেগ্রোস দ্বীপের পশ্চিম অংশ বাগো শহরের মরিয়ম খাতুন (৩২)। মূলত এই দুই তরুণ প্রেমিকের বাসা তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের পাশাপাশি দুটি গ্রামে।

স্থানীয় এবং ওই দুই তরুণদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে ফেসবুকে উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয় ফিলিপাইনের জাম্বোয়াঙ্গা উপদ্বীপ অঞ্চলের বাসিন্দা খাদিজা ইসলামের। খাদিজা তখন সৌদি আরবে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। ধর্ম পরিবর্তনের আগে তার পূর্ব নাম ছিল রিজেল ক্লিয়ার। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব গড়ায় ভালোবাসার সম্পর্কে।

চলতি বছরের গত ৫ অক্টোবর সৌদি থেকে বাংলাদেশে আসেন খাদিজা ইসলাম। ঢাকায় বিমানবন্দরে তাকে রিসিভ করেন রাকিবুল। পরদিন ৬ অক্টোবর মুসলিম রীতিনীতিতে বিয়ে করেন তারা। বর্তমানে তারা নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন। ভিন দেশি পুত্রবধূ পেয়ে খুশি রাকিবুলের পরিবার।

এদিকে, প্রেমের টানে উপজেলার একই ইউনিয়নের মালশিরা গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে রেজাউল করিমের কাছে ছুটে এসেছেন ফিলিপাইনের নেগ্রোস দ্বীপের পশ্চিম অংশ বাগো শহরের প্রেমিকা মরিয়ম খাতুন। মরিয়ম খাতুনের ধর্ম পরিবর্তনের আগে তার পূর্বনাম ছিল চারিনা মলিন।

প্রেমিক রেজাউল ও ভিন দেশি প্রেমিকা মরিয়ম খাতুন সিঙ্গাপুরে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজের সুবাদে রেজাউল সিঙ্গাপুরে থাকায় মরিয়মের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। প্রায় তিন মাস আগে ভিন দেশি ওই প্রেমিকা মরিয়ম বাংলাদেশে এসে তানোর উপজেলার কাঁমারগা ইউনিয়নের মালশিরা গ্রামের প্রেমিক রেজাউলকে মুসলিম রীতিনীতিতে বিয়ে করে তার বাড়িতে বসবাস করছেন তিনি।

রাকিবুলের সঙ্গে খাদিজার পরিচয় এবং রেজাউলের সঙ্গে মরিয়মের পরিচয় কীভাবে জানতে চাইলে তারা বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে পরিচয়। আমরা মোবাইলে ইংরেজি ভাষা ট্রান্সলেট করে মেসেজ আদান প্রদান করতাম। এভাবে চেনাপরিচয়, বন্ধুত্ব। তারপর ধীরে ধীরে ভালো লাগা, আমাদের প্রেমের সম্পর্ক। পৃথক-পৃথকভাবে চারজনই তাদের পরিবারের সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে আলোচনা করেন। চার পরিবারই সম্মতি দেয়। কিন্তু বাধা ছিল দূরত্ব।

প্রায় তিন মাস আগে প্রথমে মরিয়ম এবং গত দু-দিন আগে খাদিজা বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশি প্রেমিকদের সঙ্গে বিয়ের পর বর্তমানে স্বামীর সংসারে থাকছেন তারা। ভিন্ন পরিবেশে আস্তে আস্তে মানিয়ে নিচ্ছেন ভিন দেশি প্রেমিকারাও।

বিদেশি হলেও পুত্রবধূকে পেয়ে খুবই খুশি রাকিবুলের বাবা সাইদুর রহমান। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, অসংখ্য মানুষ তাদের দেখতে আসছেন। এটা দেখে ভালোই লাগছে। আর ভিন দেশি নববধূ খাদিজা ও মরিয়ম বলেন, সবার কাছে দোয়া চাই, আমরা যেন সুখী হতে পারি।

তানোর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর খোঁজখবর নেওয়ার জন্য দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

Sharing is caring!