স্টাফ রিপোর্টার:
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর সারাদেশের জনপ্রতিনিধিরা কমবেশী আত্মগোপনে আছেন। তবে বিয়ানীবাজারের চিত্র ভিন্ন। এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছাড়া বাকী সব জনপ্রতিনিধি নিজ নিজ অফিসে যাচ্ছেন, দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের দিন বিকেলে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লবের সরকারি দপ্তর ও সাবেক পৌর মেয়র মো: আব্দুস শুকুরের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাংচুর হলেও অন্য কোন জনপ্রতিনিধি আক্রান্ত হননি।
টানা ক্ষমতায় থাকার সুবাদে বিগত দিনে স্থানীয় সরকারের সব স্তরেই আওয়ামী লীগ তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। জেলা ও উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার প্রায় সব শীর্ষ পদই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দখলে। যদিও সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে বিয়ানীবাজারের দু’টি ইউনিয়নে বিএনপির আব্দুল মন্নান ও মাহবুবুর রহমান এবং আরোও দু’টি ইউনিয়নে জামায়াতের দেলোওয়ার হোসেন ও ফরিদ আমদ চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হন। এখানকার মেয়র পদে আওয়ামীলীগের ফারুকুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে একই দলের আবুল কাশেম পল্লব, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের জেসমিন নাহার, ভাইস চেয়ারম্যান পদে জমিয়তের আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে আওয়ামীলীগের খসরুল হক বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের সবাই তাদের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে আওয়ামীলীগ সমর্থক চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা এলাকার বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে সমন্বয় রাখছেন। বুধবার উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক সভায় পৌরসভার মেয়র ফারুকুল হক বলেন, সৌহার্দ-সম্প্রীতি বজায় রেখে আমরা সবাই বিয়ানীবাজারকে নতুন করে গড়তে চাই। রাজনৈতিক বিবেদ থাকলেও উন্নয়নে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন খান জানান, রাজনৈতিক সম্প্রীতি আমাদের ঐতিহ্য। যদিও বিগত সরকারের সময়ে সে ঐতিহ্য কিছুটা লোপ পায়। কেউ অপরাধী হলে সেটা ভিন্ন কথা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তথ্য অনুযায়ী, আগে সব ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হতো। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৫ সালের আইন সংশোধন করে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ার পর বিএনপিসহ অধিকাংশ বিরোধী দল স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করে। ফলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যায় সরকারদলীয় প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।
সংবাদটি শেয়ার করুন।