স্টাফ রিপোর্টার:
সাবেক নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ এ আদেশ দেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানকে শুক্রবার ভোরে ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় কিশোর আবদুল মোতালেব (১৪) নিহতের ঘটনায় করা মামলায় শাজাহান খানকে আদালতে হাজির করা হয়। মোতালেবের বাবা আবদুল মতিন গত ২৬ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৫ জনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় এ মামলা করেন। এদিকে আইনজীবীদের হইচইয়ের মধ্য দিয়ে শুনানি শেষ হয় শাজাহানের।
জানা যায়, আদালতে কড়া নিরাপত্তা, সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি আর আইনজীবীদের হইচইয়ের মধ্য দিয়ে শুনানি শেষে সাবেক নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ। মাদারীপুর থেকে আটবার নির্বাচিত সাবেক এ এমপিকে গ্রেফতারের পর শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় নিরাপত্তার চাঁদরে। তাকে পুলিশের হেলমেট ও জ্যাকেট পরানো হয়; চারপাশে ঘিরে থাকেন পুলিশ সদস্যরা।
শাজাহান খানকে এজলাসে আনার সঙ্গে সঙ্গে দোতলার সিঁড়ির পাশে লোহার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ভেতর ঢুকতে চাইলেও পুলিশ তাদের সুযোগ দেয়নি। পরে পুলিশের এক কর্মকর্তা এসে শুধু প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের ঢোকার সুযোগ দেন। তবে যাদের হাতে ক্যামেরা ছিল, তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
রিমান্ড শুনানিতে এজলাস কক্ষে ছিলেন ডিএমপির প্রসিকিউশনের নতুন ডিসি নজরুল ইসলাম। এজলাসে সাংবাদিকদের প্রবেশে তিনি কড়াকড়ি করেন। সাংবাদিকরা তার সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান। পরে এজলাসে ছবি না তোলার প্রতিশ্রুতিতে ভেতরে প্রবেশ করেন সাংবাদিকরা।
এদিকে এজলাসে কড়াকড়ির ফলে অন্যদিনের চেয়ে শান্তিপূর্ণ ও হইচই কম হলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী নিজেকে ‘ড. কামাল হোসেনের জুনিয়র’ পরিচয় দিলে হট্টগোল হয়।
তবে আগে একদফা হইচই হয়- কাঠগড়ায় শাজাহান খানকে বসার জন্য এক পুলিশ সদস্য চেয়ার এনে দিলে। বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একজন বলছিলেন, ‘১৭ বছরে অনেক আরাম-আয়েশ হয়েছে। কাঠগড়ায় কোনো চেয়ার দেওয়া যাবে না।’
আইনজীবীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে চেয়ারটি নিয়ে বের হয়ে যান ওই পুলিশ সদস্য।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মো. মাসুদুর রহমান বাদল, আনোয়ারুল ইসলাম ও মো. কাইয়ুম হোসেন নয়ন।
আইনজীবী বাদল বলেন, ‘এ আসামি ১৪ দলের নেতাদের পরিকল্পনায়, সরাসরি নির্দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ও শারীরিক নির্যাতন চালান। ধানমন্ডিতে আন্দোলনের মধ্যে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মতিনের ১৪ বছরের ছেলে আব্দুল মোতালিব বুকে ও গলায় গুলি লাগলে নিহত হন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য শাজাহান খানের রিমান্ড আবশ্যক।’
পরে আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করতে আসেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ কামরুজ্জামান মাহবুব। আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ এ সময় তাকে ড. কামাল হোসেনের জুনিয়র পরিচয় করিয়ে দিলে হইচই শুরু করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সংবাদটি শেয়ার করুন।