মিলাদ জয়নুল:
বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমানের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হবে আরোও কয়েক মাস পরে। অবসরকালীন অবকাশ যাপনে নিজ এলাকা বড়লেখার হাটবন্দে তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন তিনি। ঘুষ-দূর্নীতির টাকায় এই বাড়িটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। আধুনিক ডিজাইনের এই বাড়ি নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমানের নানা অনিয়ম-দূর্নীতির চিত্র দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-সিলেট অফিসের নজরে আনা হয়েছে। তার মেয়াদকালে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের সকল তথ্য খতিয়ে দেখতে দুদক পরিচালকের কাছে দাবী করেন অভিযোগকারী ব্যক্তি।
সূত্র জানায়, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে মৌলুদুর রহমানের যোগদানের পর বিয়ানীবাজারে শিক্ষার তদারকি কার্যক্রম চলছে দায়সারাভাবে। তার উদাসীনতার কারণে উপজেলার স্কাউট কার্যক্রমে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। গত ৪ বছর থেকে স্কাউটের কোন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেনা স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ একাই স্কাউট কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক জানান, প্রতি বছর মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো থেকে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার ফি’ শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করা হয়। এরপরও বার্ষিক ক্রীড়া ফি’র নামে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে মৌলুদুর রহমান বাধ্যতামূলক বিদ্যালয় প্রতি ৫০০টাকা অংশগ্রহণ ফি এবং ইভেন্ট প্রতি খেলার পৃথক ফি’ও আদায় করে আসছেন। তিনি ২০১৬ সালে রাজনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ছাতক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু কোন কর্মস্থলেই তার উপস্থিতি সুখকর ছিলনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগীরা জানান, সরকারি পরিষেবা পেতে মৌলুদুর রহমানকে প্রতি খাতে ঘুষ দিতে হয়। সরকারের দেওয়া বিনামূল্যে বই পেতে তাকে দিতে হয় স্কুল প্রতি চার-পাঁচশো টাকা। পাঠ্যপুস্তকের পরিবহন ব্যয় সরকার থেকে দেয়া হলেও সেই সরকারি টাকা পকেটস্থ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি’ এন্ট্রি বাবত দেড় শতাধিক শিক্ষকদের সম্মানি থেকেও উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। সূত্র আরোও জানায়, শিক্ষকদের প্রশিক্ষনের জন্য প্রতিদিন নাস্তা বাবদ ৮০ টাকা করে বরাদ্দ করেছে যথাযথ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের নাস্তার জন্য জনপ্রতি সর্বোচ্চ ৪০-৫০ টাকা হারে ব্যয় করেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রশিক্ষনে অনুপস্থিত থাকা শিক্ষকদের সই-স্বাক্ষর জাল করে ভাতা উত্তোলন করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান জানান, ঘুষ নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি এসবের সঙ্গে জড়িত নই।