স্টাফ রিপোর্টার:
আজ রাজধানীতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি। বেলা আড়াইটায় নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ হবে। এতে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা ছাড়াও আশপাশের সকল জেলা ও মহানগর থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। ইতমধ্যে জড়ো হতে শুরু করেছে নেতাকর্মীলা।
সমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
নেতারা জানান, এই সমাবেশ থেকে তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নতুন বার্তা দেবেন।
এদিন সিলেট, খুলনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, রাজশাহী মহানগরে শোভাযাত্রা করবে বিএনপি। এতে নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা।
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে রাজধানী ঢাকায় গণসমাবেশ এবং ঢাকার বাইরে অন্য মহানগরগুলোতে ১৫ সেপ্টেম্বর শোভাযাত্রা করার কথা ছিল বিএনপির। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে কর্মসূচি পিছিয়ে আজ মঙ্গলবার করার ঘোষণা দেয় দলটি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে তারেক রহমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড, জাতীয় নির্বাচন, রাষ্ট্র সংস্কারে দলের দেওয়া ৩১ দফা, দেশকে স্থিতিশীল রাখতে দলের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ করণীয়, রাজপথের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যেবদ্ধ থাকা, আন্দোলনসহ নানা বার্তা দেবেন।
জানতে চাইলে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১৭ বছর আমরা কখনো ছিলাম ছোট কারাগারে অথবা বাংলাদেশ নামক ফ্যাসিবাদের বৃহৎ কারাগারে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্যদিয়ে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। আমরা মুক্ত পরিবেশে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণ উপায়ে ঢাকায় গণসমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছি। এবার নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই সমাবেশ সফল করতে কাজ করেছেন।
জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এই সমাবেশের মূল আকর্ষণ দেশনায়ক তারেক রহমান। তিনি কী বক্তব্য দেন, তা শোনার আগ্রহ নিয়ে-ই গণতন্ত্রকামী মানুষ নয়াপল্টনে জমায়েত হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, এই সমাবেশে ঢাকা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা এবং নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেবে। অতীতের মতো বাধা না থাকায় ভয়-ডরহীনভাবে বাস ট্রেনে অনেকটা রিলাক্স মুডে যেভাবে পারেন – এই সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিয়েছেন ।
ঢাকা জেলা বিএনপির প্রস্তুতি কেমন জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, সুশৃঙ্খলভাবে ঐক্যবদ্ধ ঢাকা জেলা বিএনপি গণসমাবেশে অংশ নেবে; এই নির্দেশনাই নেতাকর্মীদের আমরা দিয়েছি। জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলেছি, নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবার আগ্রহের জায়গা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সমাবেশ থেকে কী বার্তা দেন। তার সেই বক্তব্য শোনার জন্যই মূলত নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে আসবেন।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে মন্তব্য করে নিপুণ বলেন, আসলে দেশনায়ক তারেক রহমান এখন নেতাকর্মীদের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি যা বলেন, নেতাকর্মীরা তাই মেনে চলেন। তার এক ডাকে-ই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিএনপির ৪২২ জন নেতাকর্মী জীবন উৎস্বর্গ করেছেন। বাকি নির্যাতনের কথা বাদ দিলাম। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, সমাবেশ পরিচালনা করবেন দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
ঢাকার বাইরে ৯ মহানগরে শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন যারা: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্যদের মধ্যে আজ সিলেট মহানগরে শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন মির্জা আব্বাস, খুলনায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে সালাউদ্দিন আহমেদ, বরিশালে বেগম সেলিমা রহমান, রংপুরে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ বীর বিক্রম। ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ফরিদপুরে বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কুমিল্লায় মো. শাজাহান, রাজশাহীতে শামসুজ্জামান দুদু শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করেছি। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। এটা আমাদের প্রাথমিক বিজয়। এখন আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে হবে। সেজন্য গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে আছি এবং থাকব।
সংবাদটি শেয়ার করুন।